১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১০ রজব ১৪৪৬
`

কাঁঠালিয়ায় বিলুপ্তির পথে ঘুঘু পাখি

- ছবি : নয়া দিগন্ত

ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার গ্রামে চিরচেনা ঘুঘু পাখি এখন বিলুপ্তির পথে। নিরাপদ আবাস ও খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে পাখি নিধন, ফসলের জমিতে অধিকমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত ঘুঘু পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

কাঁঠালিয়ার পথে-প্রান্তে এখন আর সকাল-দুপুর ঘুঘু পাখির মিষ্টি মধুর ডাক শোনা যায় না। আগে কৃষি জমি, খামার, ঝোপ-ঝাড়, বন-জঙ্গল ও গ্রামের গাছে গাছে ঘুঘু পাখির দেখা মিলত। এখন আর তাদের দেখা মিলে না।

ঘুঘুর প্রধান খাদ্য মূলত ধান। এছাড়া ঘাস, আগাছা, শস্যদানা, গাছের কুঁড়ি ও কচি পাতাও খায় এরা। স্ত্রী ঘুঘু সাধারণত বছরে তিনবার এক জোড়া করে ডিম পাড়ে। মাত্র ১৪ থেকে ১৫ দিনে সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে।

এক সময়ে কাঁঠালিয়া উপজেলার দক্ষিণ চেচঁরী, হেতালবুনিয়া, মশাবুনিয়া, আমরিবুনিয়া, বড় কাঠালিয়া, আউরা, শৌলজালিয়া, আওরাবুনিয়া ও জাঙ্গালিয়া গ্রামের মাঠে, গাছের ডালে ঘুঘু পাখির দেখা মিললেও এখন তাদের দেখা পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত শিকারিদের হাতে ধরা পড়া ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে অত্যন্ত ভীতু ও লাজুক প্রকৃতির ঘুঘু হারিয়ে যেতে বসেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ছয় প্রজাতির ঘুঘু পাওয়া গেলেও, তিলা ঘুঘু ছাড়া অন্য পাঁচ প্রজাতির ঘুঘু খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে। ঘুঘু পাখির কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, অতিমাত্রায় শব্দ দূষণ, বন-জঙ্গল কেটে বসত-বাড়ি ও কলকারখানা স্থাপন।

কাঁঠালিয়া সদর ফাজিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মো: নুর-ই-আলম ছিদ্দীকী জানান, কালের বিবর্তনে ঘুঘু পাখি অন্য সব পশুপাখির মতো বিলুপ্ত হতে বসেছে। এক সময় আমাদের দেশের বন-জঙ্গলে, শহরে, গ্রামে সব জায়গায় এই পাখি প্রচুর দেখা গেলেও বর্তমানে খুব কমই দেখা যায়। বিভিন্ন কারণে ঘুঘু পাখি দিন দিন কমে যাচ্ছে। শিকারি কর্তৃক ঘুঘু শিকার একটি অন্যতম কারণ। অনেকে শখের বশে বন্দুক দিয়ে এই পাখি শিকার করে থাকেন। এছাড়াও ঘুঘু পাখি ঝোপ-ঝাড়ে ও ছোট গাছে এবং মানুষের বসত-বাড়ির আশপাশে বাসা বানায়। এজন্য মানুষজন সহজেই ঘুঘু শিকার করতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ইমরান বিন ইসলাম জানান, ঘুঘু পাখির অনেক উপকারিতা রয়েছে। এই পাখি ফসলের ক্ষেত থেকে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় ও ফড়িং শিকার করে খায়। এতে ফসল ভালো হয়। কৃষকও আর্থিকভাবে লাভবান হন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা: মো: হাসিবুর রহমান সজীব বলেন, ঘুঘুর গোশতে অনেক পুষ্টি গুণ রয়েছে, যা মানুষের শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করে। দেশীয় প্রজাতির ঘুঘু শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও বিদেশী প্রজাতির ঘুঘু পালন করা ও খাওয়া যায়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: বখতিয়ার উদ্দিন জানান, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে পাখির সংখ্যা ও ডিম পাড়ার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এছাড়া ঝোপ-ঝাড় ও গাছপালা কেটে ফেলায় নিরাপদ আবাসস্থলের অভাব, নির্বিচারে পাখি শিকার করাসহ বিভিন্ন কারণে ঘুঘু পাখি বর্তমানে বিলুপ্ত হতে চলেছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘুঘু পাখি রক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ঘুঘু পাখি একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’


আরো সংবাদ



premium cement
দোষ বানানো : ট্রাইব্যুনালের বিচারে জবরদস্তিমূলক সাক্ষ্যের ভূমিকা সুনামগঞ্জে শীতার্তদের মাঝে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ ১৫ জানুয়ারি থেকে সাবিনাদের ক্যাম্প শুরু এস এ খালেক এমপি স্মরণে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা আবাহনী ৪৩তম বিসিএসের ২৬৭ জন কর্মকর্তাকে পদায়ন হাসিনা-মোদি চুক্তির আলোকে দহগ্রামে সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ‘আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে নারায়ণগঞ্জে গডফাদার সৃষ্টি করেছে’ আরো ৩২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করলো ইসরাইল প্রাথমিক পর্যায়ে সাক্ষরতা অর্জন নিশ্চিত করা জরুরি : গণশিক্ষা উপদেষ্টা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নাম বদল ও পুনর্গঠনের দাবি কৃষিবিদদের

সকল