মৃত্যুর সাড়ে ৩ বছর পর কবরে মিললো আলেমের অক্ষত লাশ
- কাঁঠালিয়া (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৯, আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২২
মৃত্যুর তিন বছর সাত মাস পর কবরে মিললো একজন আলেমের অক্ষত লাশ। কাফনের কাপড়েও লাগেনি সামান্য দাগ। চারপাশে চিকচিক করছিল বালু। বিরল এ ঘটনায় ওই এলাকায় হইচই পড়ে গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার বটতলা-জমাদ্দার হাট আঞ্চলিক সড়কের পাশে একটি পারিবারিক কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২০২০ সালে ওই কবরে দাফন করা হয়েছিল মরহুম মাওলানা মো: মাছুম বিল্লাহ (শাহ জালাল) মুন্সিকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মৃত্যু ব্যক্তির বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণকারী মো: আনোয়ার হোসেন মাওলানা মো: মাছুম বিল্লাহর কবরের একটি অংশ ভাঙা দেখতে পেয়ে মেরামত করতে গেলে কবর খুড়তেই তিনি ওই আলেমের অক্ষত লাশ দেখতে পান। এমনকি কাফনের কাপড়ও নষ্ট হয়নি।
মরহুম আলেমের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, দ্বিতীয়বার স্বচক্ষে মরহুম মাওলানা মো: মাছুম বিল্লাহ (শাহ জালাল) মুন্সিকে অবিকল দেখতে পেয়ে তারা অবাক।
জানা গেছে, ৫৫ বছর বয়সে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন মাওলানা মো: মাছুম বিল্লাহ (শাহ জালাল) মুন্সি। তিনি পেশায় ছিলেন উত্তর চেচঁরী দাখিল মাদরাসার সহ-সুপার ও কাঠালিয়া খান বাড়ি মসজিদের ইমাম। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানে ভিড় জমান আশপাশের এলাকার শত শত মানুষ। তারা জানান, পরহেজগার মানুষ ছিলেন মাওলানা মাছুম বিল্লাহ। এলাকার সব থেকে জনহিতকর মানুষ হিসেবে খ্যাতি ছিল তার। তিনি ছিলেন ছারছীনা দরবারের একজন একনিষ্ঠ মুরিদ।
মরহুমের ছেলে মো: আল আমিন মুন্সি জানান, তার বাবার শরীরের কোথাও কোনো পচন ধরেনি। এমনকি কাফনের কাপড়ও নষ্ট হয়নি। তাকে কোনো কিছুই স্পর্শ করেনি। যেভাবে তাকে কিবলামুখী করে কবরে রাখা হয়েছিল সেভাবেই আছে। তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ এটা আল্লাহর রহমত ছাড়া আর কিছুই নয়।
উত্তর তালগাছীয়া নেছারিয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক ও কাঠালিয়া বন্দর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, এ ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক নয়, যারা দুনিয়াতে সবকিছু ভুলে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলেন তাদেরকে কবরে সুসংবাদ দেয়া হয়। কবর পোকা-মাকড়ের ঘর হলেও তাদের কোনো কিছুই স্পর্শ করে না। শুধু তাই নয়, ইসলামের পথে থাকা এসব ব্যক্তির দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নেন।
মরহুমের চাচা মো: ফারুক হোসেন মুন্সি বলেন, আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কার হিসেবে এটা দিয়েছেন। কারণ এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন-যারা আল্লাহর হয়ে যান, আল্লাহ তাদের হয়ে যান। এ ধরনের মানুষকে কবরে কোনো কিছু স্পর্শ করবে না এবং কবরেও তাদের রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহই করেন।
কাঁঠালিয়া সদর ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় কোনো বান্দাকে কোনো অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে সম্মানিত করতে পারেন। সেটি হতে পারে যুগের পর যুগ লাশ অক্ষত রাখার মাধ্যমেও। অতএব হতে পারে এটি একটি কারামত কিংবা আল্লাহর কুদরতের একটি অংশ। অতএব, যে ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় ঈমান ও নেক আমলের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, তার লাশ যদি দীর্ঘদিন পরও আমরা অক্ষত দেখতে পাই সেক্ষেত্রে তার প্রতি আমরা সুধারণা করতে পারি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা