চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পোর্ট কানেকটিং (পিসি) রোড উন্নয়ন প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাইফুদ্দীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে পদমর্যাদার অপব্যবহার করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
চার্জশিটে সাইফুদ্দীন ছাড়াও আরো তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- কুমিল্লার মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: জাকির হোসেন, ইউসিবিএল কুমিল্লা শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো: সরোয়ার আলম (বর্তমানে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত) এবং এনআরবি ব্যাংক কুমিল্লা শাখার প্রধান মোহাম্মদ তোফায়েল।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স রানা বিল্ডার্স’ ইউসিবিএল ব্যাংকের কুমিল্লা শাখা থেকে ঋণ নেয়। চুক্তি অনুযায়ী, চসিক থেকে পাওয়া বিলের অর্থ সরাসরি ব্যাংকের হিসাবে জমা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাইফুদ্দীন নিয়ম ভঙ্গ করে ব্যাংকের পরিবর্তে সরাসরি ঠিকাদারের নামে প্রায় ২৪ কোটি ৯১ লাখ ৯৬ হাজার ৩০৭ টাকার চেক ইস্যু করেন। এই অর্থ পেয়ে ঠিকাদার কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই পালিয়ে যায়, যার ফলে নগরবাসীকে বছরের পর বছর ধরে ভাঙাচোরা রাস্তায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই ঘটনায় ২০২২ সালের ১০ মে দুদকের উপ-পরিচালক মো: আনোয়ারুল হক দুটি মামলা দায়ের করেন। আদালত প্রাথমিক চার্জশিট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিলে, তদন্ত কর্মকর্তা মো: বেনজীর আহমদ পুনরায় তদন্ত শেষে সাইফুদ্দীনের বিরুদ্ধে নতুন করে চার্জশিট দাখিল করেন।
দুদকের তদন্তে সাইফুদ্দীনের বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। ঠিকাদারদের বিল থেকে কেটে নেয়া প্রায় ৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট ও আয়কর সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে এবং চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
এরআগে চসিকের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও সাইফুদ্দীন দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো দহয়। দুদকের মামলায় তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে পরে জামিনে মুক্তি পান।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোকারম হোসেন জানান, আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় চার্জশিট জমা পড়েছে। আগামী ২৮ অক্টোবর চার্জশিট গ্রহণ বিষয়ে শুনানি হবার কথা রয়েছে।



