টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে সিলেটে ট্রেনযাত্রায় নতুন নিয়ম

‘টিকিট কালোবাজারি রোধে এটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। প্রথম দিকে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল সবাই পাবেন।’

এমজেএইচ জামিল, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি বৈঠক
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি বৈঠক |ছবি : নয়া দিগন্ত

টিকিটের কালোবাজারি ঠেকাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে সিলেটের প্রশাসন। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে সিলেটে একজনের ট্রেনের টিকিটে অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবেন না। ট্রেনে উঠতে হলে যাত্রীদের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়ন সংক্রান্ত এক জরুরি বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: সারওয়ার আলম।

তিনি জানান, টিকিট কালোবাজারি রোধে এটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে। প্রথম দিকে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল সবাই পাবেন। একজনের টিকিটে আরেকজন ভ্রমণ বন্ধ করতে পারলে কালোবাজারিও বন্ধ হয়ে যাবে।

দীর্ঘদিন ধরে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা-সিলেট সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে ট্রেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনলাইন টিকিট মিলছে না বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। টিকিট ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেগুলো শেষ হয়ে যায়, যার বড় অংশ কালোবাজারিরা কিনে নেয় বলেও জানা যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত মঙ্গলবার আকস্মিক সিলেট রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন যান জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম।

গত সপ্তাহে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের দাবিতে সড়ক যোগাযোগ উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন সিলেটের জামায়াতের ৩ কেন্দ্রীয় নেতা- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির। এছাড়া গত রোববার একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জেলা প্রশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো: রেজাউন নবী, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো: মাহবুবুর রহমান, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামসহ প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও পরিবহন খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

বৈঠকে ঘন ঘন বিমানের ভাড়া বৃদ্ধি, রেলের টিকিট সঙ্কট, কালোবাজারি রোধ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের সংস্কার দ্রুত শেষ করা- এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো: রেজাউন নবী বলেন, সিলেটের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে, বিশেষ করে যোগাযোগ খাতে। ভবিষ্যতে কোনো সিন্ডিকেটের হাতে যেন সিলেটের যাত্রীরা জিম্মি না হয়, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একই বৈঠকে জেলা প্রশাসক আরো জানান, নগরের হকারদের পুনর্বাসনের জন্য লালদিঘির মাঠ পুরোপুরি প্রস্তুত। ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত শহরের সড়ক ও ফুটপাতে হকার বসতে পারবেন। এরপর ১৯ অক্টোবর থেকে (রোববার) নগরের রাস্তায় হকারদের বসতে দেয়া হবে না।