দেড় যুগে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক রানা
রানার অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ এতদিন মুখ খোলার সাহস পায়নি- আলি জামশেদ নিকলী (কিশোরগঞ্জ)
- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
চাকরি নেই, পরিবার নেই, কোনো ব্যবসাও করেন না কিংবা কোনো রেমিট্যান্স যোদ্ধাও নন তিনি। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও মাস্তানিই তার একমাত্র কাজ। রাজনীতিকে পুঁজি বানিয়ে রাতারাতি ভাগ্য বদলে নিয়েছেন তিনি। বনে গেছেন টাকার কুমির। ছাত্রলীগ নেতা সেজে মাত্র দেড় যুগে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন আজিজুল হক রানা।
কিশোরগঞ্জের নিকলীতে জন্ম নেয়া এক ভয়াবহ ছাত্রলীগ ক্যাডারের নাম রানা। যার নাম শুনলে অনেকেই ভয়ে কেঁপে উঠেন। তার গ্রামের বাড়ি হাওরাঞ্চলের নিকলীর গুরই ইউনিয়নে। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তরের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি। সর্বশেষ ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদটিও অর্থের বিনিময়ে বাগিয়ে নেন এই তরুণ।
রানার নিজ এলাকায় খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় নানান চাঞ্চল্যকর তথ্য। এলাকাবাসী জানান, রানার বাবা ফজলুল হক ছিলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। ছেলের রাজনীতিতে আসার আগে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো ছিল না। ফজলুল হক ছেলের সুবাদে আওয়ামী লীগের কর্মী বনে গিয়ে ইউপি সদস্য এবং পরে ২০১১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান হন। সর্বশেষ হয়ে যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক।
রানার ছোট ভাই জাকির হোসেনও ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে নামধারী যুবলীগ নেতা সেজে এলাকার নদী নালা খাল বিলের দখল ও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা বানিয়ে ফেলেন। দখল করে নেন হিলচিয়া বাজারের মূল্যবান খাসজমিও। তাদের পরিবারের অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ এতদিন মুখ খোলার সাহস পায়নি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ২০০৩-২০০৪ সেশনে অনার্স প্রথম বর্ষে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন আজিজুল হক রানা। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তার উত্থান শুরু শরিফুল হাসান অনুর ছত্রছায়ায়। ২০১১ সালে ঢাকা মহানগর উত্তরের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন। সবশেষে ২০২২ সালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদও বাগিয়ে নেন রানা। এক পর্যায়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। সেই সুবাদে পুলিশের বিভিন্ন নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির সুযোগ নিয়ে রানা কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য গড়ে তোলেন। সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদসহ একাধিক পুলিশের মহাপরিদর্শকের সাথেও ছিল তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।
রানা একটা পর্যায়ে বিভিন্ন স্থান থেকে উঠতি বয়েসী যুবকদের নিয়ে গড়ে তুলেন শীর্ষ মাফিয়া ক্যাডার। নিজে হয়ে উঠেন অগাধ সম্পদের মালিক। তার সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ১০/২ সি ব্লকের ১৫০০ স্কয়ার ফিটের বাসা, ধানমন্ডি ৩/৩ এবং উত্তরার ৭নং সেক্টরের ফ্ল্যাটসহ মূল্যবান আরো অনেক প্লট ও ফ্ল্যাট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা