০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

চৌগাছায় ২৫ বছর ধরে বন্ধ আবাসনের সংস্কার

বসবাসকারী পরিবারগুলো দুর্ভোগে
আবাসন প্রকল্পের অনেক ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে : নয়া দিগন্ত -


যশোরের চৌগাছায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাতিবিলা-হায়াতপুর আবাসন ২৫ বছর ধরে সংস্কার না করায় দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। এ দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি করেন বাসিন্দারা।
জানা যায়, উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের পাতিবিলা-হায়াতপুর গ্রামে ভূমিহীন ও গৃহহীন ছিন্নমূল পরিবারের জন্য ১৯৯৯ সালে নির্মিত হয় আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প (আবাসন)। টানা ২৫ বছর অতিবাহিত হলেও সংস্কারের উদ্যোগ না নেয়ায় বর্তমানে আবাসনের বাসিন্দারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ফুটো-ফাটা মরিচা ধরা টিনের চালে পলিথিন দিয়ে দুর্ভোগে দিন পাড় করছেন।

এ দিকে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাজুক সব টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। পানির কলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক পরিবার আবাসন ছেড়ে অন্য জায়গায় ঠাঁই নিয়েছেন। আবাসনের টিনের চালে বড় বড় ফুটো ও ঘরের বেড়ার টিনগুলো পচে নষ্ট এবং ২০১৯ সালের আম্ফান ঝড়ে কয়েকটি ব্যারাক দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আবাসনের প্রতিটি ঘরের চাল ও টিনের বেড়ায় ফুটো হয়েছে। এই বর্ষাকালে এ দুর্ভোগ যেন তিন-চারগুণ বেড়ে যায়। বৃষ্টি থেকে রক্ষায় টিনের ওপর পলিথিন দিয়ে রেখেছেন তারা। শীতকালেও প্রতিটি রুমে বৃষ্টির পানির মতো শিশির বিন্দু পড়ে বিছানাপত্র ও আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চলতি বর্ষাকালে অনেকে আবাসন ছেড়েছে। আবাসনে ৬০টি পরিবার বসবাস শুরু করে কিন্তু বর্তমানে রয়েছে ২০টি পরিবার। প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল ও একটি টয়লেট নির্মাণ করা হলেও সংস্কারের অভাবে তা ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ পলিথিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে কাঁচা টয়লেট বানিয়ে তা ব্যবহার করছেন। ফলে তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আছে। পানির কল টিউবওয়েল জুড়াতালি দিয়ে সচল রয়েছে মাত্র একটি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত জরাজীর্ণ আশ্রয়ণ ও আবাসন প্রকল্প পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন আবাসনের বাসিন্দারা।

আবাসনের বাসিন্দারা জানান, তাদের কষ্ট কে শোনে। টানা বৃষ্টিতে টিনের ফুটো দিয়ে ঘরে হড়-হড় করে পানি ঢুকছে। এই বয়সে এত কষ্ট নিয়ে থাকতে চান না রোকেয়া বেগম (৫৮)। তাই দ্রুত আবাসনের ঘরগুলো ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণের দাবি জানান তিনি। একই কষ্ট নিয়ে ভাঙাচুরা আবাসনে রান্না-বান্নাসহ দিন পাড় করছেন জানু বেগম (৫৭), ফাতেমা বেগম (৫৪) ও সেফালী খাতুনসহ (৪৫) অনেকেই।
পাতিবিলা-হায়াতপুর আবাসনের সভাপতি রাজিব হোসেন জানান, ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আবাসনটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছেন। প্রতিশ্রুতি দিলেও পূর্ণ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমানে আবাসনের ঘরগুলোর অবস্থা খুবই করুন।
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্মমিতা শাহা এ বিষয়ে জানান, পাতিবিলা-হায়াতপুর আবাসনের দুরবস্থার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। এই অর্থবছরেই বরাদ্দ আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি আশাবাদী। বরাদ্দ আসলেই সেখানকার বসবাসরত প্রত্যেকটি পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement