কলাপাড়ায় ঝুঁকির মধ্যে ১৪ হাজার মানুষের বসবাস
দুই চরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র- এইচ এম হুমায়ুন কবির কলাপাড়া(পটুয়াখালী)
- ১৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত কাউয়ার চর ও পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি চর গঙ্গামতি এলাকায় একটি মাত্র আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটন পল্লী গঙ্গামতি ঘেঁষা এসব গ্রামের মানুষ এখনো আকাশে মেঘ দেখলে বাড়ি ঘর ছেড়ে পাশের গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এ এলাকার অধিকাংশ মানুষের বসবাস বেড়িবাঁধের বাইরে। প্রলয়ঙ্করী সুপার সাইক্লোন সিডরে এ চরের সাতজন মারা গেছে। এ গ্রামের মানুষের বেশির ভাগই জেলে। আবার কেউ কেউ দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সরেজমিনে গ্রাম দু’টির বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ চরের বাসিন্দাদের অন্যতম একটি সমস্যা হলো- চরে একটি মাত্র আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। কাউয়ার চর এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ১০০ জন। চর গঙ্গামতি এলাকায় চার হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৬০০। ঝড়ের সময় মানুষজনের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান সংকুলান হয় না। তাই এ চরের মধ্যবর্তী স্থানে আরো একটি আশ্রয়কেন্দ্র হলে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হবে। কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতির কিছু উঁচু জায়গায় টিউবওয়েল বসানো হলে জোয়ারের পানি ঢুকে টিউবওয়েল নষ্ট হবে না।
কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতির প্রলয়ঙ্করী সুপার সাইক্লোনের সময় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ার কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে গ্রাম দু’টির অবস্থান হওয়ায় বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের কারণে এমন ক্ষতি হয়েছে।
চর গঙ্গামতি বিদ্যালয়ে রিমালে আশ্রয় নেয়া সাহেদা বেগম বলেন, ঘরে কোমর পানি। পরিবারের সদস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছি। আশ্রয়কেন্দ্রে না গেলে বন্যার পানিতে শিশুদের বিপদ বাড়তে পারে। তাই বাড়িঘরের সব ফেলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই।
কাউয়ার চর গ্রামের জেলে আলী হোসেন বলেন, ঝড়ের সময় আমাদের দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে উঠতে হয়। চরের মধ্যে একটি আশ্রয়কেন্দ্র থাকলে আমাদের ভোগান্তি কম হতো।
চর গঙ্গামতি ইউপি সদস্য সিদ্দিক হাওলাদার বলেন, চর গঙ্গামতি বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা গ্রাম তাই বন্যার সময় সব তলিয়ে যায়। এখানের বেরিবাঁধটি খুবই নিচু। বেরিবাঁধটি আরো উঁচু করে নির্মাণ করা প্রয়োজন। আর টিউবয়েলগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পানি দূষিত থাকে তা আর পান করা যায় না।
কাউয়ার চর ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, কাউয়ার চর গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। গত কয়েক বছর থেকে আমরা উপজেলা প্রশাসনে গিয়ে অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কাজ হয়নি।
ধুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল রহিম বলেন, কাওয়ারচরের বাসীন্দাদের কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। দুর্যোগের সময় বেরিবাঁধের বাইরের মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না।