১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাজারে আসতে শুরু করেছে চন্দনাইশের কাঞ্চননগর পেয়ারা

কাঞ্চননগরে মহাসড়কের পাশে পেয়ারা বিক্রি করছেন এক চাষি : নয়া দিগন্ত -

দক্ষিণ চট্টগ্রামে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে উৎপাদিত স্বাস্থ্যসম্মত পেয়ারা চন্দনাইশের কাঞ্চননগর এখন বাজারে আসতে শুরু করেছে। প্রতিবছর মৌসুমি ফল আম, কাঁঠাল, লিচুর সাথে কাঞ্চননগর জাতের (অর্গানিক) পেয়ারা বাজারে আসা শুরু করে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে আসতে শুরু করেছে স্বাস্থ্যসম্মত কাঞ্চননগর পেয়ারা।
ভিটামিন সি-এ ভরা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ স্বাস্থসম্মত (অর্গানিক) কাঞ্চননগর জাতের এই পেয়ারা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যেও যাচ্ছে। মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে টানা চার মাস এই পেয়ারা বাজারে পাওয়া যায়। এই পেয়ারা বাজারে আসা শুরু করলে প্রায় ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, এ অঞ্চলে পাহাড়ের পাদদেশজুড়ে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড়ের মাটিগুলো খুবই উর্বর হয়ে ওঠে। এ কারণে পেয়ারা গাছে কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োগ কিংবা কোনো কীটনাশক ছিটানোর প্রয়োজন হয় না। তা ছাড়া চাষিরা ডাটা ও পাতাসহ পেয়ারা সংগ্রহ করেন। এ কারণে ফরমালিন ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো ছাড়াই ৪-৫ দিন পর্যন্ত এ পেয়ারা অনায়াসে সংরক্ষণ করা যায়।
প্রতি বছর মৌসুমের শুরুতে শত শত শ্রমিক কয়েক মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বাগানগুলো থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো তারা বিশেষ কৌশলে লালসালুর পুঁটলিতে মুড়িয়ে কাঁধে করে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। পরে লালসালু বাঁধা অবস্থায়ই পেয়ারাকে থরে থরে সাজানো হয় পাইকারদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। দেশের বিভিন্ন স্থানে পেয়ারা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখানে পাইকাররা কিনে শত কিংবা ডজন হিসেবে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি ডজন পেয়ারা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়।
স্থানীয় কৃষি অধিদফতর সূত্র জানায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও বোয়ালখালী উপজেলায় অন্তত ১৩ হাজার একর পাহাড়ি পাদদেশে পেয়ারা বাগান রয়েছে। তবে চন্দনাইশ উপজেলাই হলো কাঞ্চননগর জাতের পেয়ারার উৎপত্তিস্থল। এখানকার পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে বিশেষ করে চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর, জঙ্গল হাশিমপুর, ছৈয়দাবাদ, লট এলাহাবাদ, কাঞ্চননগর, দোহাজারী, ধোপাছড়ি, পটিয়া উপজেলার কেলিশহর, হাইদগাঁও, শ্রীমাই এলাকার উৎপাদিত পেয়ারাই সর্বোৎকৃষ্ট হয়ে থাকে। এ অঞ্চলের চাষিরা পেয়ারা গাছে রাসায়নিক সার প্রয়োগ ও কীটনাশক ছিটায় না। তা ছাড়া পেয়ারা সংরক্ষণেও কোনো প্রকার ফরমালিন বা মেডিসিন ব্যবহার করে না।


আরো সংবাদ



premium cement