১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই

মিঠাপুকুরে লাইসেন্সবিহীন ৩ শতাধিক করাতকল

-

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রংপুরের মিঠাপুকুরের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়কের পাশে এবং ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা এসব করাতকলে নির্বিচারে চেরাই করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এতে এক দিকে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে জলবায়ু, অন্য দিকে দূষিত হচ্ছে সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। এসব মিলের কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তবুও অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব করাতকলের মালিকদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনগত পদক্ষেপ।
জানা যায়, বন বিভাগের নীতিমালা (সংরক্ষিত আইন) অমান্য করে গড়ে ওঠা তিন শতাধিক করাতকলের মধ্যে মাত্র পাঁচটি করাতকলের লাইসেন্স আছে। অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই সব করাতকলের মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে থাকেন। করাতকলের কারণে নীরব পল্লী অঞ্চলেও শব্দদূষণের শিকার হচ্ছে পরিবেশ।
সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বেশির ভাগ করাতকলের জন্য বহন করে নিয়ে আসা গাছের গুঁড়ি লোড-আনলোডিংয়ের সময় যানবাহন চলাচলে ও পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সড়কের পাশে ফেলে রাখা বড় বড় গাছের গুঁড়ির কারণে সড়ক দুর্ঘটনার মতো ঘটনাও ঘটছে।
একাধিক করাতকল মালিক জানান, উপজেলাপর্যায়ে করাতকল তদরকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বৈধ কোনো অনুমোদন না থাকলেও সরকারের নিষিদ্ধ কোনো গাছ কাটা হয় না। তবে করাতকল স্থাপনের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করে রাখা হয়েছে। শাল্টিগোপালপুর বন বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলায় পাঁচটি করাতকলের লাইসেন্স রয়েছে। আরো ২৫টি করাতকল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে। মিঠাপুকুরের শাল্টিগোপালপুর (ভারপ্রাপ্ত) রেঞ্জের কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে অনেক করাতকল সিলগালা করা হলেও মালিকদের অনেকেই আবার তা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পেলে বন বিভাগের লাইসেন্স দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।
এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্লা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয়রা জানান, করাতকল মালিকদের কারণে গাছপাল উজাড় হচ্ছে। গাছ পরিপক্ব হওয়ার আগেই লোভে পড়ে গাছের মালিকরা গাছ বিক্রি করে দিচ্ছে করাতকলে। পরিবেশ অধিদফতরের উচিত এসব অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। বন বিট কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, আমাদের নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। তাই জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হয়। খুব দ্রুতই আবার অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement