১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
উদ্দেশ্য রাস্তা সংস্কার

কলাপাড়ায় কেটে ফেলা হলো অসংখ্য তাল ও খেজুর গাছ

সংস্কারের নামে কেটে খালে ফেলে দেয়া দু’টি তালগাছ : নয়া দিগন্ত -


পাকা বাড়িতে নয়; কাঠফাটা রোদে একটু প্রশান্তি মেলে গাছ-তলাতেই। অথচ, মাথার ওপর ছায়া আর পাখিদের আশ্রয় দেয়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাস্তা সংস্কারের নামে কেটে ফেলা হয়েছে অন্তত ৩৫টি তাল ও খেজুর গাছ। উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর ফকিরের নির্দেশে ওই ইউনিয়নের মৌলভীতবক গ্রামের সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো কেটে ফেলে স্থানীয়রা। সড়ক এলাকায় একের পর এক কাটা পড়ছে ছায়া বৃক্ষগুলো। এতে ছায়াবঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ, ঠিকানা হারাচ্ছে পাখ-পাখালি। গাছ কাটার এমন সিদ্ধান্ত কিংবা নিয়ম জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকির; বলছেন পরিবেশবিদরা।

সরেজমিন জানা যায়, প্রায় ২০ দিন আগে কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ওই গ্রামের দুই কিলোমিটার সড়কে মাটি ফেলার কাজ করেন চেয়ারম্যান। এর আগে তার নির্দেশে বাড়ির সামনে সরকারি সড়কে থাকা গাছগুলো স্থানীয়রা নির্বিচারে কেটে ফেলে। এছাড়া সড়কে মাটি ফেলার সময় ভেকু দিয়ে অনেক গাছ অপসারণ করে খালে ফেলে দেয়া হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী ও বজ্রপাত প্রতিরোধক এসব গাছ না কেটেও সড়কে মাটি ফেলার কাজ করা যেতো বলে দাবি স্থানীয় অনেকের।

অসহনীয় গরমে যখন ‘গাছ লাগাও, পরিবেশ বাঁচাও’-বৃক্ষরোপণের জন্য এমন আওয়াজ উঠেছে, ঠিক সে সময়েই বনায়নের এসব গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহ চলা জুন মাস জুড়েই গাছ কাটা চলে।
মৌলভীতবক গ্রামের হারুন বলেন, দুইপাশের গাছগুলো সড়কে ছায়া দিতো। এসব ছোট-বড় সব গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। গাছ না থাকায় রোদের তীব্রতা আরো বেড়ে গেছে। গরমে সড়কে চলাচল করতে পারছি না।’ স্থানীয় ফারুক বলেন, ‘এই রাস্তায় যখন গাছ ছিল, ঠাণ্ডা বাতাস আসত। গাছ কেটে ফেলতেছে, এখন রোদে চলা যায় না। পথচারীরা গাছের ছায়া পাচ্ছে না। গাছগুলোতে আশ্রয় নেয়া পাখিগুলো আশ্রয় হারাচ্ছে। এ সড়কে শোনা যাবে না পাখির কিচিরমিচির শব্দ।’

সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির কেরামত মিয়া জানান, সরকার বজ্রপাত রক্ষায় তালগাছ লাগায়, সে রক্ষক হয়ে রাস্তা সংস্কারের নামে তালগাছসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৬০টির মতো গাছ কেটে ফেলেছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। চাকামাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর ফকির বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যে, গাছকাটার বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
উপকূলীয় বনবিভাগ পটুয়াখালীর দায়িত্বরত সফিকুল ইসলাম জানান, রাস্তার কোনো গাছ কাটতে হলে বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু কিভাবে অনুমতি ছাড়া রাস্তার গাছ কাটল। গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী ও বজ্রপাত প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement