দাগনভূঞার দাদনার খাল দখলে দূষণে বিপর্যস্ত
- মিজানুর রহমান দাগনভূঞা (ফেনী)
- ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:৩৪
অবৈধ দখলদারদের দখল ও নানা ধরনের বর্জ্যের আখড়ায় পরিণত হয়ে জৌলুস হারিয়েছে দাগনভূঞা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দাদনার খাল। এক সময় ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার বাণিজ্যিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল এ খাল।
দুই শ’ বছরের পুরনো এ খাল দিয়ে নোয়াখালী খাল হয়ে ছোট ট্রলারে পণ্যসামগ্রী আনা নেয়া করত ব্যবসায়ীরা। প্রবহমান পানি এলাকার কৃষিকাজের সেচের মাধ্যম ছিল দাদনার খাল। এ খালের পূর্ব অংশ ফেনী ছোট নদীর সাথে সংযুক্ত ছিল আর পশ্চিম অংশ মিলিত হয়েছে নোয়াখালী খালের সাথে। এখন ভরাট ও দখল হতে হতে এর অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে। নামার বাজার থেকে বসুরহাট রোডসংলগ্ন খালের প্রায় অংশ দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এ ছাড়া পৌর এলাকার আবর্জনা, পশু জবেহ খানাসহ খালসংলগ্ন টয়লেটের বর্জ্যে বিষাক্ত হয়ে মৃতপ্রায় হতে চলেছে খালটি।
স্থানীয়রা জানান, দুই শ’ বছরের পুরাতন কৃষিনির্ভর এ অঞ্চলের কৃষকরা এই খালের পানি দিয়ে সোনার ফসল ফলাতেন। এ খালের প্রবহমান পানি এলাকার কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হতো। পরবর্তী সময় ভূমিদস্যুরা খালের অধিকাংশই দখল করে ভবন ও দোকানপাট নির্মাণ করায় ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে নামার বাজার আবাসিক এলাকার পতিত আবর্জনা ফেলায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, সৃষ্টি হচ্ছে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব, এ ছাড়াও বন্ধ হয়ে আছে খালটির প্রবহমান স্রোতধারা। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর বর্ষাকালে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। তাই খালটি পুনরুদ্ধার ও সংস্কার করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন স্থানীয়রা।
দাগনভূঞা পৌর মেয়র ওমর ফারুক খান জানান, দাদনার খালের পৌরসভার অংশে অবৈধ দখল উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে তালিকাসহ চিঠি দেয়া হয়েছে। আর খালটি পরিপূর্ণ সংস্কার ও দখলমুক্ত করার জন্য সরকারিভাবে যৌথ প্রচেষ্টায় খালটি পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। তাই সবার সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সহকারী প্রকৌশলী কামরুল হাসান জানান, আমরা খালটি খননের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় অর্থ সহায়তা না করায় কাজ শুরু করা হয়নি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পরামর্শে অন্য প্রকল্পের মাধ্যমে খালটি খননের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর খনন শুরু হলে অবৈধ দখলে থাকা সম্পত্তি তখন উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা নয়া দিগন্তকে জানান, নানাবিধ সমস্যায় নান্দনিক সৌন্দর্য হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী দাদনার খালটি। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মধ্য দিয়ে এটি প্রবাহিত হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা তাদের স্ব-স্ব এলাকায় খাল সংস্কারে কাজ করছে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা পেলে দাদনার খালটি খননের কাজ শুরু করা হবে এবং অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা