দেওয়ানগঞ্জের বন্যার্তরা ত্রাণ নয় গোখাদ্য চায়
- দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা
- ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:৩৩
‘আংগোরে সাহায্য দেওয়া নাগবো না, আমরা সাহায্য চাই না, আংগোরে গরু মোষের ঘাস, খ্যাড় দিবেন, গরু মোষ মরবার ধরছে। ঘাস খ্যাড় পাই কই? গরুগুল্যা মরবার ধরছে। না খাবার পায়া গায়ের পালানের দুধ বন্ধ হবার ধরছে’- কথাগুলো বলছেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের গুজিমারী রেললাইনের বাসিন্দা, বর্তমানে বাড়িতে পানি উঠায় দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনে গবাদি পশু ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নেয়া কৃষক আলম শেখ।
এবার বন্যা শুরুর প্রথম দিকে উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের গুজিমারী গুচ্ছগ্রাম, গুজিমারী আশ্রয়ণ কেন্দ্র, গুজিমারী রেললাইনে বসবাসকারী বাসিন্দা ও হলকারচর গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠে যায়। এ সময় তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য গবাদি পশু ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উঠেন রেলওয়ে হাইস্কুল, রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়িতে। সেখানে স্থানের অভাব দেখা দেয়ায় দুই শতাধিক কৃষক পরিবার গবাদি পশু, মালামালসহ এসে উঠেন দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন প্লাটফর্মে। সেখানে তারা কয়েকদিন ধরে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছেন।
রেলস্টেশনে বসবাসকারী খোকন মিয়া, মেহেরুন নেছা, সাহেব আলী, সুরুজ্জামান, কমলা, কুলসুম, খুকি, নিলুফাসহ অনেকেই জানান, বাড়িঘরে পানি উঠায় আমরা পাঁচ দিন ধরে রেলস্টেশনে গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছি। চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানসহ মেম্বার সাহেব মাঝে মাঝে খোঁজ নিচ্ছেন। এখানে আমরা অনেক কষ্টে আছি। পানি কখন কমবে তা জানি না। রাতে গৃহকর্তা পানিতে নিমজ্জিত বাড়িঘরের মালামাল পাহারা দিতে যায়, আমরা যারা গৃহিণী তারা গবাদি পশুসহ থাকি স্টেশনে।
তারা জানান, সবচেয়ে বড় বিপদ আমাদের গবাদি পশুর খাদ্য নিয়ে। এ ছাড়া দিনরাত রেলযাত্রী ও মালবাহী ট্রেন আসা-যাওয়া করে। এ সময় উচ্চ শব্দে হুইসেল ও লোক সমাগমে আমাদের ঘুম হয় না। গবাদি পশু ও শিশুরা চমকে উঠে। কোথাও গো খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। গরু, মোষ, ছাগল, ভেড়া খাদ্যের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। আর ক’দিন এভাবে থাকলে এদের বাঁচিয়ে রাখাই অসম্ভব হয়ে পড়বে।
দেওয়ানগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে পৌরসভাসহ উপজেলার আট ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। যোগাযোগে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।