০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`

দেওয়ানগঞ্জে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এনজিও উধাও

মাইদুল ইসলাম রনি, কামরুজ্জামান (উপরে), সাজু আহমেদ, রেজাউল করিম রেজা -

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভুয়া একটি এনজিও উধাও হয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাউনিয়ার চর এলাকায়। ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এন্টারপ্রাইজ নামের এনজিওটির কথিত কর্মকর্তারা হতদরিদ্র মানুষের আবাসন ও পুষ্টি প্রকল্পের লোভ দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে দুই কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে। এর পর সেই টাকা নিয়ে গত ২৪ জুন অফিস বন্ধ করে উধাও হয়ে যায়।
চলতি বছর জানুয়ারি মাসে মাইদুল ইসলাম রনি, রেজাউল করিম রেজা, সাজু আহম্মেদ ও মো: কামরুজ্জামান নামের চার ব্যক্তি কাউনিয়ার চর বাজার সংলগ্ন এলাকায় মোছা: মাজেদা বেগমের বাড়ি ভাড়া নিয়ে একটি এনজিওর অফিস খোলেন।
তাদের প্রত্যেকের বাড়ি পার্শ্ববর্তী রাজিবপুর থানার বড়াইডাঙ্গী ও শিবেরডাঙ্গী এলাকায় বলে জানা গেছে। এনজিওটির শাখা ব্যবস্থাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে রনি, ফিল্ড অফিসার রেজা, হিসাবরক্ষক সাজু আহম্মেদ এবং অডিট অফিসার কামরুজ্জামান। তাদের মাঠ কর্মী পদে স্থানীয় ১২ জন মহিলা এবং একজন পুরুষকে চাকরিও দেয়া হয়। বেতন ধরা হয় সাত থেকে আট হাজার টাকা। এই ১৩ জন মাঠ কর্মীর মাধ্যমেই অসহায় দরিদ্র মানুষকে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
গত ২৪ জুন সোমবার মাঠকর্মী হারুনুর রশিদ দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ করেন। এ অভিযোগে উল্লেখ করা হয় এনজিও কর্মকর্তারা প্রথমে অত্র এলাকার তিনশ’ হতদরিদ্র পরিবারকে বিনামূল্যে একটি করে কম্বল, এক কেজি ময়দা, এক লিটার তেল দেয়। কিছ ুদিন পর ১৫০টি পরিবারকে ঘর দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, তৃতীয় ধাপে ২৫০০টি পরিবারকে ১৮ হাজার ৭২০ টাকা করে পুষ্টিভাতা দেয়ার কথা বলে ২৫০০ টাকা করে মোট ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২৪০টি পরিবারকে ঘর দেয়ার কথা বলে ৪০ হাজার করে ৯৬ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ ১০০টি পরিবারকে টিউবওয়েল ও স্যানিটারি টয়লেট দেয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা নেয়। এতে তাদের মোট দুই কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ওঠে। ওই টাকা নিয়ে তারা রাতারাতি পালিয়ে যায়।
মাঠ কর্মী রেহেনা পারভিন, রুবিনা খাতুন, সারমিন আক্তার, কল্পনা আক্তার, আছমাউল হুসনা বলেন, মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মানোর জন্য এনজিও কর্মকর্তারা টাকা লগ্নিকারীদের চার-পাঁচজনকে ঘর বানিয়ে দিয়েছে। নিমাইমাড়ী এলাকার হাফিজ, মাখনের চর এলাকার জহুরুলসহ কয়েকজনকে শুধু ঘরের খাম আর কাঠ দিয়েছে। বাকি সবাইকে ঘর দিবে বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে।
পশ্চিম নিমাইমাড়ী এলাকার বাসিন্দা লাইলী ও তার ছেলে শামীম বলেন, থ্রি-কোয়ার্টার টিনশেডের একটি ২০ হাত পরিমাপের ঘর পাবো এ জন্য ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন দেখি তাদের অফিসটি তালাবদ্ধ। একই এলাকার হাফিজা খাতুন ও তার মা বালিতন বলেন, তারা আমাদেরকে একটি ঘর বানিয়ে দিবেন এ আশায় অন্য জায়গা থেকে কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা তুলে এনে তাদের হাতে দিয়েছি। পুষ্টি প্রকল্পে নাম দেয়া সহিতন, ফজিলা, নাছিমা, রিনা ও স্বপ্না বলেন, সন্তানের ভালোর জন্য সুদের ওপর টাকা নিয়ে নাম দিয়েছিলাম। কিন্তু এনজিওটি টাকা নিয়ে আমাদের মতো গরিব মানুষগুলোকে ধোঁকা দিয়ে চলে গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, যারা এই প্রতারণা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement
সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাসদস্যদের প্রস্তুত রাখতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা খাদ্যগুদাম তৈরিতে পরামর্শক খরচই ২৯০ কোটি টাকা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৪ মামলা বাতিলের রায় বহাল সফটওয়ার শিল্পে কর্মসংস্থান ও বিদেশী মুদ্রা হারানোর শঙ্কা তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন : সালাহউদ্দিন বাধ্যতামূলক ছুটি ৬ ব্যাংকের এমডিকে ভয়ঙ্কর রূপে তালিকাভুক্ত ৯৭৯ ছিনতাইকারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ সেন্টমার্টিন রক্ষায় বিশ্বমানের উদ্যোগ আরামকোর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে স্বাগত জানানো হয়নি : সৌদি রাষ্ট্রদূত

সকল