প্রকাশ্যে ভাঙ্গারি ব্যবসা, নেপথ্যে চোরাই মালের বাণিজ্য
- শরিফুজ্জামান লোহাগড়া (নড়াইল)
- ২৮ জুন ২০২৪, ০০:০৫
- মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ চুরির সাথে জড়িত
- সবাইকে ম্যানেজ করে চলে ভাঙ্গারি ব্যবসা
- ভাঙ্গারি ব্যবসার কোনো ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয় না
লোহাগড়ায় ভাঙ্গারি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চলছে চোরাই মালের জমজমাট বাণিজ্য। এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। ফুলে-ফেঁপে উঠছে এসব ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যবসায়ীদের সহযোগীরা রাতের আঁধারে গ্যাসের রাইজার, বাসা-বাড়ির বৈদ্যুতিক সার্ভিস লাইনের তার, টিউবওয়েল, টিউবওয়েলের মাথা-হাতল, বাড়ির আওতার টিন, বাড়ি নির্মাণসামগ্রী ও পরিত্যক্ত আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করে দোকানিদের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করছে।
প্রকাশ্যে ব্যবসার নামে ভাঙ্গারির দোকানগুলোতে এসব চোরাইমাল কেটে টুকরা টুকরা করে অন্যসব সরঞ্জামের সাথে মিশিয়ে রাখা হয়।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া পৌর শহরের আনাচে কানাচে, ওলি-গলিতে গড়ে উঠেছে ভাঙ্গারি মালামাল কেনাবেচার দোকান। এইসব ভাঙ্গারি দোকানিদের সহযোগিতা ও দাদনের টাকা নিয়ে এলাকাভিত্তিক গড়ে উঠেছে একাধিক ছোট-বড় চোরের দল। মূলত এখানকার মাদকসেবীদের বড় একটি অংশ চুরির সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। দিনে-দুপুরে এসব চোরাই মালামাল বেচাকেনা হলেও প্রশাসন রহস্যজনক কারণে ভাঙ্গারি ব্যবসা নজরদারির ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানা যায়, গত ২২ জুন এক রাতেই লক্ষ্মীপাশা গ্রাম থেকে ৮টি টিউবওয়েল চুরি হয়েছে। গত ৯ মে লক্ষ্মীপাশা গ্রামের চারটি বাড়ি থেকে ১২টি বৈদ্যুতিক মিটার থেকে তার চুরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী বলেন, চুরির মাল ছাড়া প্রকৃত ভাঙ্গারি ব্যবসা করা খুবই কঠিন। আর সবাইকে ম্যানেজ করে চলে এই ব্যবসা। তিনি আরো জানান, একেকজন ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর অধীনে পাঁচ-ছয়জন ফেরি ব্যবসায়ী থাকেন এবং বেশ কিছু চোরও দাদন দিয়ে লালন পালন করা হয়।
এ বিষয়ে লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, ‘কিছু মাদকসেবী বাড়ি থেকে যখন নেশার টাকা যোগাড় করতে পারে না, তখন মালামাল চুরি করে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
লক্ষ্মীপাশা সঙ্গীত অ্যাকাডেমির সভাপতি বি এম লিয়াকত হোসেন বলেন, ভাঙ্গারর দোকানিদের সাথে অসংখ্য চোরের সখ্যতা রয়েছে। কারণ ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীদের লাভের অংশই আসে এইসব চোরাই মাল থেকে।
লোহাগড়া পৌরসভার লাইসেন্স ইন্সপেক্টর তৌফিক আহমদ জিনিয়াস বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ভাঙ্গারির দোকানের নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয় না। পুরাতন মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের লাইসেন্স দেয়া হয়।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি কাঞ্চন রায় বলেন, চুরির অভিযোগ করা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া চুরির মালামাল একশ্রেণীর ভাঙ্গারির দোকানদার গোপনে ক্রয়-বিক্রয় করছে। তিনি আরো বলেন, ভাঙ্গারি দোকানগুলো নজরদারিতে আছে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ দিকে প্রশাসনের দ্রুত ভাঙ্গারি ব্যবসা নজরদারিতে আনা উচিত বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা