১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

জামালপুরের ৫ উপজেলায় অর্ধশত স্থানে নদীভাঙন

আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষ
নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে : নয়া দিগন্ত -

জামালপুর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা-ব্রহ্মপুত্রসহ স্থানীয় ছোট নদী ঝিনাই, জিনজিরাম ও দশাআনিতে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। জেলার অন্তত পাঁচটি উপজেলার অর্ধশত স্থানে চলছে নদীভাঙনের এই খেলা। এসব উপজেলার মধ্যে রয়েছে দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, বকশীগঞ্জ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী।
উজানের পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর শুরু হয় এই ভাঙনের খেলা। গত কয়েক দিন ধরে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন থেমে নেই। এলাকাবাসী জানান, নদীর পানি কমার সাথে সাথে নদীর পাড় জেগে ওঠতে শুরু করেছে। সেই সাথে ভাঙনও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গত তিন সপ্তাহে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের শতাধিক বাড়ি ও কয়েক শ’ একর জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে আরো দেড় হাজারেও বেশি পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, ভাঙন ঠেকাতে সমন্বিত সমীক্ষা প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী রাক্ষসী রূপ ধারণ করে। একের পর এক গ্রাস করতে থাকে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। তারা বলেন, গত তিন সপ্তাহে অর্শতাধিক ঘরবাড়ি গ্রাস করেছে যমুনা। ঘরবাড়ি-ভিটামাটি ও ফসিল জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে দেড় শতাধিক পরিবার। প্রতিদিনই নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।
ইতোমধ্যে একটি প্রাইমারি স্কুল, মসজিদ, মাদরাসা, ডাকাতিয়া গুচ্ছগ্রাম ও আদর্শ গ্রামসহ ১০টি গ্রাম নদীতে চলে গেছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, নদীভাঙনে ভিটামাটিহারা পরিবারগুলোকে খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছ থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত আড়াই মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বলেন, কুতুবের চরে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে ৫০০ জিও ব্যাগ ড্রাম্পিংয়ের কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বরখাল গ্রামের মফিজ উদ্দিন বলেন, বরখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয় আমাদের গর্ব ও স্মৃতি। আমাদের ঘরবাড়ি, জমিজিরাত তো গেছেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দু’টি রক্ষা করা না হলে আমাদের গর্ব, আমাদের স্মৃতি হারিয়ে যাবে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, বরখাল এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কিছু স্থাপনা নদীভাঙন থেকে রক্ষার জন্য ২০০ মিটার এলাকা তাৎক্ষণিক জিও ব্যাগ ড্রম্পিংয়ের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সার্বিকভাবে যমুনার বাম তীর সংরক্ষণের জন্য সমন্বিত একটি সমীক্ষা প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে।


আরো সংবাদ



premium cement