বাগাতিপাড়ায় বিপুলসংখ্যক নলকূপে পানি নেই
বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ- আবদুল আওয়াল বাগাতিপাড়া (নাটোর)
- ২৬ জুন ২০২৪, ০১:৩৬
‘পানির অপর নাম জীবন’- বিষয়টি হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মানুষেরা। দীর্ঘ সময় অনাবৃষ্টি ও ক্ষরায় উপজেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩৫ থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। এ কারণে চলতি বর্ষা মওসুমেও উপজেলার সাধারণ নলকূপ, জেড মোটর ও ডিজেলচালিত সেচযন্ত্রে পানি উঠছে না। ফলে মানুষের মাঝে পানির জন্য দেখা দিয়েছে হাহাকার। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।
উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় সূত্র বলছে, উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৩৫ হাজার সাধারণ টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে। পানির চরম সঙ্কটে সচ্ছল মানুষরা ইতোমধ্যে ডিপ-টিউবওয়েল অথবা জলমোটর বসিয়েছেন। তবে সেসবের সংখ্যা পরিসংখ্যান দপ্তরের জানা নেই।
অপরদিকে উপজেলা জনসাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তাদের দফতর থেকে বিভিন্ন সময়ে উপজেলা স্থাপন করা অগভীর তারা পাম্প, মডিফাইড টিউবওয়েল ও জলমোটরের (সাবমার্সিবল পাম্প) সংখ্যা প্রায় তিন হাজার ৫৫টি। বর্তমানে যার মধ্যে এক হাজার ৪৯ টি নষ্ট। বাকি ২ হাজার ৬টি সচল রয়েছে।
আরো জানা যায়, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ও ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেশি হওয়ায় দেশজুড়েই পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে আগের দেড় ইঞ্চি বোরিং টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। আর এ উপজেলায় অধিকাংশ টিউবওয়েলই দেড় ইঞ্চি বোরিং টিউবওয়েল। তাই উপজেলাজুড়েই পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে ডিপ-সিলিটার ও জলমোটরে পানি পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলার রহিমানপুর, দেবনগর, সাইলকোনা, দয়ারাপুর, বাটিকামারী, ক্ষিদ্রমালঞ্চি, কালিকাপুর, জিগরী, বিলগোপালহাটি, স্বরূপপুর এবং কামারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা জানান, গত বছরও শুষ্ক মৌসুমে উপজেলাজুড়ে পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। চলতি বছর এ সঙ্কট আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। খাল-বিল, পুকুর, এমনকি বাগাতিপাড়া দিয়ে বয়ে যাওয়া বড়াল ও মুসা খাঁ নদও শুকিয়ে গেছে। ফলে সুপেয় পানি পান করা, বসতবাড়িতে গোসল, রান্না ও জমিতে সেচ দেয়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র ডিপ টিউবওয়েল ও জল মোটর (সাবমার্সিবল পাম্প) গুলোতে পানি উঠছে। এলাকায় যাদের জলমোটর রয়েছে সকাল-সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে পানি নেয়ার জন্য ধর্ণা ধরচ্ছে গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষরা।
চকতকিনগর গ্রামের নাজমুল হোসেন বলেন, প্রায় চার মাস থেকে তার বাড়ির টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। দু’টি গরু এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতিদিন ৪৫০-৫০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। বাড়ি থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরের মসজিদে থাকা পানির ট্যাংকি থেকে ভারে করে পানি টানতে হয়। টাকা না থাকায় বাড়িতে ডিপটিউবওয়েল ও জলমোটর কিছুই বসাতে পারছেন না তিনি।
বিলগোপালহাটি গ্রামের রিনা বেগম বলেন, আধা কিলোমিটার দূরের বিলগোপালহাটি জামে মসজিদের পানির ট্যাংকি থেকে প্রতিদিন বাড়ির সমস্ত পানি টেনে নিয়ে আসতে হয়। তার মতো ওই গ্রামের আরো ১৫ পরিবার ওই মসজিদ থেকে পানি নিয়ে গৃহস্থালির কাজ করছেন।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য দফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন বলেন, পানি সঙ্কটের বিষয়টি নিয়ে তার দফতর কাজ করছে। তবে শুধুমাত্র তাদের দফতরের বরাদ্দ দিয়ে পানির সঙ্কট দূর করা সম্ভব না। তাই, তিনি দ্রুতই উপজেলা প্রশাসনের নজরে আনবেন বিষয়টি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা