মুলাদীতে বিলুপ্তির পথে তালগাছ
- ভূঁইয়া কামাল মুলাদী (বরিশাল)
- ২৩ জুন ২০২৪, ০২:১২
ঐ দেখা যায় তালগাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ওই খানেতে বাস করে কানা বগির ছা...। তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে.....। শিশুতোষ এ ছড়াগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে পঠিত হয়।
তাল এ উপমহাদেশীয় গ্রীস্মকালীন ফল। পাম গোত্রের অন্যতম দীর্ঘ ও লম্বা গাছ এটি, যা উচ্চতায় ৩০-৪০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি তাল গাছ সাধারণত একশ’ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তাল গাছের পাতা পাখার মতো গোল। এখনো তাল পাখার কদর রয়েছে সবার কাছে। তাল গাছের কাণ্ড দিয়ে তৈরি হতো ঘর ও নৌকা।
তালের বীজ ও ফল উভয়ই খাওয়া যায়। তালবীজ বা শাঁস খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তালে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও সি, আয়রন, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান। বহু উপকারি এ বৃক্ষটির প্রয়োজনীয়তা না ফুরালেও দিনদিন এটি প্রকৃতির মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
বিলুপ্তপ্রায় তাল গাছ হঠাৎ চোখে পরে মুলাদী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মোশাররফ হোসেন কবিরাজের দাদার লাগানো ৬০ বছরের একটি তাল গাছ। গাছটিতে অনেক তাল ধরেছে কিন্তু তাল পাড়ার লোকের অভাবে তাল গাছেই রয়ে গেছে।
স্থানীয় এক পরিবেশবিদ বলেন, অবাধে তালগাছ নিধনের কারণে ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ ও পশু-পাখি। গত কয়েক বছর ধরে এ কারণে বজ্রপাতে মানুষ ও পশুর মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভাদ্র মাসে তালগাছে তালে ভরা থাকত। গ্রামের মানুষ তালের রস দিয়ে তৈরি করত সুস্বাদু পিঠা-পায়েস। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় তালগাছের যে বিশাল ভূমিকা আছে এবং পরিবেশবান্ধব তালের উপকার সম্পর্কে জানা না থাকায় তালগাছ এখন ইটভাটায় লাকড়ি, ঘরের খুটি ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের আবদুল্লাহসহ অনেকেই বলেন, উপজেলার বাইরে থেকে আসা বেপারীরা দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় তালগাছ কিনে নেয়। কিন্তু নতুন করে তাল গাছ লাগানোর কথা ভাবে না কেউ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে তালগাছ রোপণের জোরালো দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, তালগাছ প্রকৃতির বন্ধু। প্রবল ঝড় বৃষ্টি ও বজ্রপাত থেকে মানুষ ও প্রাণিজগৎ রক্ষায় ভূমিকা রাখে তাল গাছ। যেসব এলাকায় তালগাছের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় ঝড় ও বজ্রপাতে মানুষ ও পশু পাখির মৃত্যু হার কম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা