ইউএনওর বাসভবনে ২ বছরের বিল বকেয়া
বিদ্যুৎকর্মীকে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ- জামালপুর প্রতিনিধি ও দেওয়ানগঞ্জ সংবাদদাতা
- ২২ জুন ২০২৪, ০৩:০৩
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনওর বাসভবনের দুই বছর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাইন কাটতে গিয়েছিলেন পল্লী বিদ্যুতের লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেন ও তার সহকর্মীরা। এ সময় ইউএনওর বাসায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য এবং অন্য লোকজন ইকবাল হোসেনকে খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন করে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওয়ানগঞ্জ ইউএনওর বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, জুন মাসে সব বকেয়া গ্রাহকের বিল আদায়ের জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় পল্লী বিদ্যুৎ দেওয়ানগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেনসহ কয়েকজন লাইন টেকনিশিয়ান উল্লিখিত অভিযানে অংশগ্রহণ করেন ।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদে বিভিন্ন ভবনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল, ইউএনওর বাসভবনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কথা বলতে যান। একপর্যায়ে তারা বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করতে চাইলে ইউএনওর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই আনসার সদস্য এবং বাসার অন্যান্য লোক লাইন টেকনিশিয়ান ইকবাল হোসেনকে বেঁধে রাখে এবং তাকে নির্যাতন করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ইয়াহহিয়া সিদ্দিকীর সাথে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা একটা মিটিংয়ে আছি।
এ দিকে আনসার সদস্যদের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা খারাপ আচরণ ও হুমকি দিয়েছে- এমন অভিযোগে খায়রুল ইসলাম নামে এক আনসার সদস্য দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ইউএনওর বাসার আনসার সদস্যদের ইনচার্জ খায়রুল ইসলাম একটি জিডি করেছেন।
দেওয়ানগঞ্জের ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের নির্দেশে ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ কর্মচারীকে আনসার সদস্যরা বেঁধে রাখেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী বিদ্যুৎকর্মীর। তবে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেছেন ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি’। এসব বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলায় কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম মো: শেখ ফরিদ মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছে। তিনি বিষয়টি সমঝোতার জন্য আগামী রোববার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। যে কারণে আপাতত আমরা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না।
শুক্রবার দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম ইয়াহিয়া সিদ্দিকী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মীকে বেঁধে রাখার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আর কোনো অভিযোগ নেই।