১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গোয়ালন্দে দ্রুত বাড়ছে পদ্মার পানি : আতঙ্কে চরের মানুষ

-

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে চরাঞ্চলবাসীর মাঝে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্রুত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় তলিয়ে যাচ্ছে কৃষি ফসল। কৃষরা আধা কাঁচা ফসল কেটে ঘরে তুলছে। কৃষি ফসলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে ধীরে ধীরে পানি বাড়ছে। তবে গত দু’দিন ধরে আশঙ্কাজনক হারে পানি বাড়তে থাকায় বন্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, পদ্মার উজানে গত কয়েক দিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি পদ্মার বুকে গড়িয়ে আসায় পদ্মার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
পদ্মা নদীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া ও উজানচর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে ওইসব এলাকার ফসলি জমির তিল, চিনা বাদাম, ধান,পাটসহ নানা ধরনের ফসল ডুবতে শুরু করেছে। কৃষকরা আধা কাঁচা তিল ও চিনা বাদাম তুলে নিচ্ছেন।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বেপারী পাড়ার কৃষক তোফাজ্জল বেপারী, সুজন হাসান, ওয়াজেদ আলী মৃধা, হায়াত আলী মৃধা, সুমন শেখ প্রমুখ কৃষককে নৌকা করে আধা কাঁচা তিল কেটে নিতে দেখা যায়। এ সময় তারা বলেন, আর মাত্র দুই সপ্তাহ সময় পেলে তিলগুলো পুরাপুরি পেকে যেত। বন্যার কারণে দুই সপ্তাহ আগেই কাটতে হচ্ছে।
এ ছাড়া ১ নং ওয়ার্ডের ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় ৭ নং ফেরিঘাটের পাশে কিষাণ-কিষাণীকে চিনা বাদাম ক্ষেতে পানি ঢোকার কারণে অপরিপক্ব বাদাম তুলে বাছাই করতে দেখা যায়। তারা জানান, আরো ১৫ দিন পরে এই ফসলগুলো তুলতে পারলে দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যেতো। নদীর পানি ঢুকে পড়ায় তাড়াতাড়ি তুলে আনা হয়েছে। কৃষকরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, উজানি ঢলে গত দু’দিনে পদ্মার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে অল্প সময়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে পারে। ছাত্তার মেম্বার পাড়ায় ৬ ও ৭ নং ঘাটের ভাঙনও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৌলতদিয়া পয়েন্টের গেজ পাঠক সালমা খাতুন জানান, গতকাল শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার এ পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় এ পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। পদ্মায় বর্তমানে ৬.২০ মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ পয়েন্টে পানির স্বাভাবিক স্তর ৭.৯০ মিটার।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল মাস থেকে পদ্মার এ পয়েন্টে পানি বাড়া শুরু হয়। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়লেও এক সপ্তাহ পর তা কমতে থাকে। এর পর ১৮ জুন থেকে আবার দ্রুতগতিতে পদ্মার পানি বাড়ছে।
এ দিকে হু হু করে পানি বাড়ায় পদ্মার বুকে থাকা চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চলের ফসলি জমি। এতে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে।


আরো সংবাদ



premium cement