১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঈদের আগেও মজুরি পাননি ইজিপিপি প্রকল্পের অতিদরিদ্র শ্রমিকরা

প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী প্রতি সপ্তাহে মজুরি পাওয়ার কথা ছিল
-

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে অতি দরিদ্রদের জন্য খণ্ডকালীন কর্মস্থান (ইউজিপি) প্রকল্পের ৩৩ দিনের কাজ শেষ হয়েছে ১৮ দিন আগে। কিন্তু ইসলামপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দুই হাজার ৮১৪ জন শ্রমিক এখনো তাদের মজুরি পাননি। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। কাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘদিন পরও টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শ্রমিকরাও। অথচ প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী প্রতি সপ্তাহে মজুরি পাওয়ার কথা ছিল দরিদ্র শ্রমিকদের।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপন ও ত্রাণ শাখা সূত্রে জানা যায়, শ্রমিকদের মজুরির টাকা পেতে যথাসময়ে কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই শ্রমিকরা তাদের মজুরির টাকা পাবেন এমন প্রত্যাশা তাদের।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ৫৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। গত ১৫ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। ৩৩ কর্মদিসের মধ্যে ৩২ দিন চলে প্রকল্পের কাজ। প্রতিদিন মাথাপিছু ৪০০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে দুই হাজার ৮১৪ জন নিবন্ধিত শ্রমিক কাজ করার সুযোগ পান।
প্রতিটি প্রকল্পে একজন করে সর্দারসহ মোট ৬৬ জন শ্রমিক দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাজের মজুরির টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কার্যাদেশ অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে গত ২৫ মে। গত ১২ মে প্রথম কিস্তির ২১ দিনের মজুরির টাকা পেতে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পাঠানো হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।
সব প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে তদারকি কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
সাপধরী ইউনিয়নের ইজিপিপি প্রকল্পের শ্রমিক পারভীন আক্তার বলেন, ‘প্রায় দুই মাস আগে কাজ করেছি। এখনো মজুরির টাকা পাইনি। সামনে ঈদ টাকা না পেলে আমাদের পরিবারে ঈদ হবে না। গোয়ালেরচর ইউনিয়নের শ্রমিক মিজান বলেন, সংসার চালাতে বড় হিমশিম খাচ্ছি। চরপুটিমারী ইউনিয়নের শ্রমিক পিয়ারা বেগম বলেন, টাকার জন্য রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করেছি। কিন্তু মজুরির টাকা দিতে এতো দেরি করা হচ্ছে কেনো?
গাইবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী বলেন, শ্রমিকরা মজুরির টাকা না পাওয়ায় বড় বিপাকে পড়েছি। প্রতিদিনই তারা টাকার জন্য আসছেন। তারা দরিদ্র মানুষ। তাদের কষ্ট বুঝি কিন্তু আমাদের কী করার আছে?
পাথর্শী ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবলু বলেন, শ্রমিকরা টাকার আশায় রাস্তায় মাটি কাটার মতো অনেক কষ্টের কাজ করেছে। টাকা না পাওয়ায় কষ্টে আছেন শ্রমিকরা। আমাদেরকেও বাড়তি চিন্তায় পড়তে হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু বলেন, শ্রমিকদের মজুরির টাকা পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আশা করছি, খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই তারা তাদের প্রাপ্য মজুরির টাকাটা পেয়ে যাবেন।
ইজিপিপি প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিরাজুল ইসলাম বলেন, কী কারণে এখনো শ্রমিকরা টাকা পাচ্ছেন না, সেটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। আমরা যথাসময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছি। টাকা ছাড় করবে মন্ত্রণালয়। হয় তো কোনো কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement