দুম্বা ও ছাগলের খামার করে সফল আদনান
- নজরুল ইসলাম সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
- ১২ জুন ২০২৪, ০০:০৫
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দুম্বা ও ছাগলের খামার করে সফলতা পেয়েছেন আদনান চৌধুরী। তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার দক্ষিণ ভাটিয়ারী গ্রামের আজম চৌধুরীর ছেলে। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে ছাগল ও দুম্বা লালনপালনকে প্রথমে অনেকেই ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু পশুদের মায়ায় পড়ে হাল ছাড়েননি আদনান। বর্তমানে তিনি উপজেলার এজন সফল উদ্যোক্তা। আসন্ন কোরবানির ঈদে ইতোমধ্যেই দশ লাখ টাকার ছাগল ও দুম্বা বিক্রি করেছেন তিনি।
আদনান চৌধুরীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালে উচ্চ শিক্ষা নেয়ার জন্য লন্ডনে যান আদনান। সেখানে একটি কলেজ থেকে এলএলবিতে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ২০১৯ সালে দেশে আসেন। তখন তিনি কোরবানির জন্য পাঁচটি ছাগল কিনেন। দাঁত না উঠায় সেখান থেকে দু’টি ছাগল তিনি কোরবানি না দিয়ে রেখে দেন। কিন্তু কিছু দিন পর একটি ছাগি অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখান তিনি। ডাক্তার বলেন ছাগিটি বাচ্চা দিবে তাই কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এর এক মাস পরেই ছাগিটি তিনটি বাচ্চা দেয়।
আদনান চৌধুরী বলেন, তখন আমার মনে হলো, কোনো ঝামেলা ছাড়াই ছাগল বৃদ্ধি পেলো। সেই থেকে আমি ছাগল পালন শুরু করি। যার থেকে ছাগল প্রথমে নিয়েছিলাম তার সাথে যোগাযোগ করে আরো কয়েকটা কিনে নিই। এভাবে বাড়তে থাকে ছাগলের সংখ্যা। করোনার পর গাজীপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সেখানে দুম্বার একটি খামার দেখতে পাই। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করে দুম্বা কিনে একসাথে পালন শুরু করি।
বর্তমানে আদনানের খামারে দেশীয় জাতের কিছু ছাগলসহ দক্ষিণ আফ্রিকার কালাহারি ও বোয়েব, ইন্ডিয়ার বরপারি, কাশ্মিরের কাশ্মিরি ছাগল এবং মধ্যপ্রাচ্য তুরস্কের হারবলি কুইন, পারসেইন ও আওয়াশি জাতের দুম্বা রয়েছে। একশটি ছাগল, চল্লিশটি দুম্বা ও চল্লিশটি ভেড়া রয়েছে তার খামারে। খামার দেখাশোনায় ১৬ জন কর্মচারী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। ভুট্টা, ভাঙা চনা মিশিয়ে সাইলেস ও সবুজ ঘাস পাতা তাদেরকে খেতে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, কোরবানি উপলক্ষে ১০টি ছাগল সাত লাখ টাকা ও চারটি দুম্বা প্রতিটি আড়াই লাখ টাকা করে দশ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। বিক্রিযোগ্য আরো চারটি দুম্বা রয়েছে। যার প্রতিটির মূল্য দেড় লাখ টাকার উপরে।
তিনি আরো বলেন, লন্ডনে এলএলবি শেষ করে দেশের একটি বিশ^বিদ্যালয় থেকে এমবিএ করি। আমরা পারিবারিকভাবেই সচ্ছল ছিলাম। এত উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে ছাগল ও দুম্বা খামার করাতে প্রথমে আমার পরিবার ভালো চোখে দেখেনি। কিন্তু আমি এ পশুগুলোর মায়ায় পড়ে যাই। বর্তমানে আমি একজন সফল খামারি।
তিনি বলেন, খামারে গড়ে আমি মনে করি এতে কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশে পশু খাদ্যের জোগানও অনেকাংশে বাড়াতে সক্ষম হচ্ছি। আমার খামার দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেক বেকার যুবকরা আসেন এবং তারাও অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ এলাকায় ছাগল বা দুম্বা পালনের খামার করার ইচ্ছা পোষণ করে যান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা