১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যশোর জেলা আ’লীগে অস্থিরতা

সভাপতির বিরুদ্ধে নেতাকে মারপিটের অভিযোগ আর নেতার অভিযোগ চাঁদাবাজির
-

যশোর জেলা আওয়ামী লীগে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। গত ৫ জুন সদর উপজেলা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এ অস্থিরতা চরম আকার ধারণ করেছে। সর্বশেষ, ফুটপাত দখল করাকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের হাতে মারপিটের শিকার হয়েছেন আরেক নেতা যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতম দমন ট্রাইবুন্যাল-২ এর পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল। মুকুলের দাবি, সদর পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে তাকে মারপিট করেছেন সভাপতি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সভাপতি শাহীন নামে এক যুবককে দিয়ে মুজিব সড়কের ফুটপাত দখল করার চেষ্টা করছেন। সেখানে তিনি বাধা মনে করছেন মুকুলকে।
অপরদিকে, পাল্টা অভিযোগ এনে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন। দুপুর ১২টায় প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি শুধু অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলই না, আরেক আইনজীবী মাহাবুব আলম বাচ্চুর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনেন।
সংবাদ সম্মেলনে শহিদুল ইসলাম মিলন দাবি করেন, তার ছয়জন কর্মীকে মারপিট করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত রোজার ঈদের সময় ফুটপাত উচ্ছেদ করে পুলিশ। ওই সময় শহিদুল ইসলাম মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলসহ কয়েকজন নেতা পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে সেখানে হকারদের বসার অনুমতি আনেন। কিন্তু পরবর্তীতে মুকুলের নেতৃত্বে একটি চক্র ফুটপাত থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা শুরু করে। সম্মেলনে তার সাথে থাকা শাহীন নামে এক যুবককে তিনি ফুটপাতে বসাতে চান। শাহীন ফুটপাতে দোকান বসাতে গেলে তার কাছে চাঁদা চাওয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশ ফাঁড়িতে মীমাংসার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু শাহীনকে ডেকে মুকুল চক্রের সদস্যরা মারপিট করে, যা জানতে পেরেই তিনি ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন। এ সময় তার সাথে অ্যাডভোকেট মুকুলের মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদকে ইঙ্গিত করে বলেন, মূলত একজন জনপ্রতিনিধির উস্কানিতে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেয়া হচ্ছ্। উপজেলা নির্বাচনে ওই জনপ্রতিনিধির প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। তার অংশ হিসেবে মুকুল চক্রকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ দিকে, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে মারপিটের ঘটনায় মঙ্গলবার মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা। একইসাথে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মারপিটের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল।
এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন নেতা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করে যাকে তাকে বহিষ্কার করে অপদস্ত করে আসছেন, যা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। সবমিলিয়ে যশোরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি সংঘাতের দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।


আরো সংবাদ



premium cement