১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লালমনিরহাটে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১৯ লাখ গবাদিপশু

ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি দাবি
লালমনিরহাটের একটি গরুর খামার : নয়া দিগন্ত -

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে লালমনিরহাটে নিরাপদ কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৪ গবাদিপশু, যা চাহিদার চেয়ে ৪৮ হাজার ৭২৩ বেশি। এ মাসের শুরু থেকে জেলার প্রতিটি হাটে পশু কেনা-বেচা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর। ইতোমধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলার পশুর হাটগুলোয় গরু-ছাগলের সরবরাহ বেড়েছে। তবে ক্রেতা সঙ্কট থাকায় পশু বিক্রি করে প্রত্যাশিত দাম পাচ্ছেন না খামারিরা। ফলে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। অনেকে কম দামে কোরবানির পশু বিক্রিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। খামারিরা আশঙ্কা করছেন, লালমনিরহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করলে তাদের পথে বসতে হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদর উপজেলা, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামসহ পাঁচটি উপজেলায় ১৮ হাজার ৬৩৯ জন খামারি রয়েছে। এসব খামারি খামারে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৪ গবাদিপশু লালন পালন করেছেন। এ জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৩৬ হাজার ৬৩১। যা চাহিদা মেটানোর পরেও ৪৮ হাজার ৭২৩ পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।
তার মধ্যে জেলা সদর উপজেলায় চার হাজার ৭৫ জন খামারির খামারে গবাদি পশু পালন করা হচ্ছে ৪১ হাজার ৬১৮টি। আদিতমারীতে তিন হাজার ৪৮২ জন খামারি পালন করছেন ৩৫ হাজার ১৬০টি পশু। কালীগঞ্জে তিন হাজার ৪১৪ জন খামারি ৩৪ হাজার ১৮২টি পশু পালন করছেন। হাতীবান্ধায় চার হাজার ৪০৯ জন খামারি পালন করছেন ৩৭ হাজার ২৭৯ ও পাটগ্রাম উপজেলায় তিন হাজার ২৫৯ জন খামারির খামারে গবাদি পশু পালন হচ্ছে ৩৭ হাজার ১১৫টি । এসব গবাদি পশুর মধ্যে মহিষ রয়েছে ২৮০।
জেলার বেশ কয়েকজন খামারি জানান, বাজারে গোখাদ্যের অতিরিক্ত দাম। এ বার হাটে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা কম। তাই ভারতীয় গরু যদি দেশে প্রবেশ না করে তা হলে যে বাজার দর আছে তাতে সব খামারি লাভবান হবেন। আর দেশীয় খামারিদের রক্ষায় ভারতীয় গরুর প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন ডেইরি খামারি অ্যাসোসিয়েশন।
পশু বিক্রেতা আদিতমারী উপজেলার শালমারা গ্রামের কৃষক সুরজ্জামান মিয়া বলেন, ‘গোখাদ্যের দাম এত বেশি বেড়েছে যে গরু পালন করে লাভবান হতে পারছি না। দুটি গরু পালন করেছি। গত এক সপ্তাহ ধরে হাটবাড়ি আনা-নেয়া করছি। দাম কম হওয়ায় পরে ৬০ হাজার টাকায় একটি গরু বিক্রি করেছি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিরাপদ গবাদিপশু গোশত উৎপাদনে খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রাণিসম্পদ দপ্তর কাজ করছেন। তবে এ জেলার কোরবানির ঈদে চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত গবাদি পশু রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাবে। হাটগুলোয় যাতে অসুস্থ গবাদিপশু বিক্রি করতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন হাটে মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি হাটে আসা কোনো গবাদিপশু অসুস্থ হলে মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা দেবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement