১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ

এক সাঁকো দুই উপজেলার মেলবন্ধন

ধরান্দি খালের ওপর নির্মিত দুই পাড়ের মেলবন্ধন কাঠের সেতুটি : নয়া দিগন্ত -

এপারে গলাচিপা, ওপারে পটুয়াখালী সদর। ১৫০ মিটার দীর্ঘ নির্মিত একটি কাঠের সেতু যেন এ দুই উপজেলার মানুষকে এক করে দিয়েছে। দুই পারের মানুষের আত্মিক বন্ধন শত বছরের হলেও মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ধরান্দি খাল যেন তাদেরকে বিচ্ছেদ করে রেখেছিল। গলাচিপা উপজেলা প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় প্রায় চার লাখ টাকায় একটি কাঠের সেতু নির্মিত হয়েছে। ইউনিয়নবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতুটি দেখতে এখন ভিড় করছেন অনেকেই।
জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রাম ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের চরমইশাদি গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ধরান্দি খাল। খালটি উত্তর দক্ষিণে প্রবাহিত। গলাচিপার অংশে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদরাসা ও একটি কলেজ রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও কলাগাছিয়া পুলিশ ফাড়ি। শত শত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকেও প্রতিদিন এ খাল পারাপার হতে হয়।
ইতোপূর্বে একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো এবং একটি ডিঙি নৌকাই ছিল খাল পার হবার একমাত্র উপায়। বর্ষা মৌসুমে প্রায় তিন মাইল ঘুরে যাতায়াত করতে হত। এখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য ইতোপূর্বে সরকারি দপ্তরে একাধিক বার আবেদনও করা হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি। সম্প্রতি একটি কাঠের সেতু নির্মাণে স্কুলগামী ছাত্রছাত্রীসহ হাজারো মানুষের স্বস্তি ফিরে আসে।

সেতুটি নির্মাণে গাছের গুঁড়ি পুঁতে তার ওপর কাঠের পাটাতন বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সেতুর রেলিং দেয়া হয়েছে কাঠ দিয়ে। সেতুর মাঝখানে করা হয়েছে সুদৃশ্য নৌকার প্রতিকৃতি। উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুটিকে সাজানো হয়েছে বেলুন ও ফেস্টুন দিয়ে। নির্মিত সেতুটি গত বৃহস্পতিবার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ফিতা কেটে সেতুটির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাঈনুল শিকদার জানান, দুই গ্রামের মানুষের যোগাযোগ সহজ করতে এলাকাবাসী ধরান্দি খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। আগের বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে হেলে পড়েছিল। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নজরে আনলে তিনি একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেন। কিছু অর্থও বরাদ্দ দেন তিনি। ৩০০ ফুট দীর্ঘ এবং চার ফুট প্রস্থের কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি।
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, খাল পারাপারে বেশ ঝুঁকি ছিল। দুর্ভোগও পোহাতে হত। তাই, উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ মিলে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে একটি স্থানীয় ব্রিজও নির্মাণ করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল