মহাসড়কের পাশে ঝুপড়ি ঘরে শহিদ মিয়ার বসবাস
শত বছর বয়সেও পাননি জাতীয় পরিচয়পত্র- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০৫
জামালপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকায় পলিথিন আর ছিন্ন কাপড়ের তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে একাকী বসবাস করেন প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ শহিদ মিয়া। শহিদ মিয়া বলেন, তার বয়স এখন ১০২ বছর।
শহিদ মিয়ার ঝুপড়ি ঘরটি স্থানীয়দের সহযোগিতায় মহাসড়কের পাশে পলিথিন ও কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই চুঁয়ে চুঁয়ে পানি পড়ে ঘরে। নড়বড়ে এই ঘরটি সামান্য ঝড়েই উড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
ঘরটির পেছনে গহিন খাদ আর বিদ্যুতের তার। এই ঘরেই একাকী বসবাস করেন শত বছর বয়সী অসুস্থ এই শহিদ মিয়া। ঝুপড়ি ঘরটি দেখে মনে হয়, দুর্ঘটনা যেন ওঁৎপেতে রয়েছে আশপাশে।
শহিদ মিয়া ছিলেন একজন রিকশাচালক। গায়ে যখন শক্তি-সামর্থ্য ছিল তখন তিনি রিকশা চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতেন। শেরপুর জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের তারাকান্দা গ্রামের মিরাজ মিয়া তার বাবার নাম। কয়েক বছর আগে তার একমাত্র ছেলে ও স্ত্রী মারা যায়। এর পর থেকে একা হয়ে যান শহিদ মিয়া। বয়সের ভারে আর নানা অসুখ-বিসুখে এখন প্রতিবন্ধিত্ব বরণ করেছেন এই বৃদ্ধ রিকশাচালক।
স্বজনহীন, ভূমিহীন ও আশ্রয়হীন এই প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ শহিদ মিয়া এখন নানা রোগে আক্রান্ত। কোথায়ও আশ্রয় না পেয়ে অবশেষে আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছেন জামালপুর-টাঙ্গাইল সড়কের পাশে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত এলাকায়। অসহায় এই বৃদ্ধ একা চলাচলও করতে পারেন না। তার একটি ভাঙা হুইলচেয়ার রয়েছে। যেটিও দেখে মনে হয় সময়ের ভারে নুয়ে গেছে। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
শহিদ মিয়া বলেন, তার বয়স ১০২ বছর। তিনি বলেন, এখনো তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) পাননি। যে কারণে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত তিনি। তিনি বলেন, নিজে নড়াচড়া করতে পারি না। হুইলচেয়ার চলানোর শক্তিটুকুও শরীরের নেই।
সিএনজি অটোরিকশা চালক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ দিন এই সড়কের পাশে পড়ে ছিল লোকটি। আমাদের মতো গাড়িচালক ও স্থানীয়রা যা দিত তাই-ই খাইতো। গত এক-দেড় বছর আগে এই এলাকার লোকজন পলিথিন ও কাপড় দিয়ে এই ঘরটি তোলে দিছে। বড় তুফান এলে এই ঝুপড়ি উল্টে যাবো।’
শহিদ মিয়া বলেন, আর কী-ই বা চাওয়ার আছে জীবনে? একটি ব্যাটারি চালিত হুইলচেয়ার আর মাথা গুঁজার একটু ঠাঁই করে দিত যদি কেউ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা