যশোর জেনারেল হাসপাতালে একের পর এক অঘটন
- এম আইউব যশোর অফিস
- ০৬ জুন ২০২৪, ০০:০৫
‘এ’ পজিটিভের পরিবর্তে ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেয়ায় এক নারীর জীবন সঙ্কটাপন্ন
যশোর জেনারেল হাসপাতালে একের পর এক অঘটন ঘটছে। সম্প্রতি ব্লাড ব্যাংকে কর্মরতদের দায়িত্বহীনতার কারণে জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে সালেহা রহমান নামে এক বৃদ্ধার। তিনি মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের কৃষ্ণবাটি গ্রামের মৃত শামছুর রহমান গাজীর স্ত্রী। তার রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ । অথচ এই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে তার রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজিটিভ বলে নির্ণয় করে তার শরীরে তিন ব্যাগ ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেয়া হয়। এতে ওই নারীর জীবন সঙ্কটাপন্ন হতে থাকলে স্বজনরা ফের রক্ত পরীক্ষা করান এবং এবার রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ বলেই নিশ্চিত হন। এ ব্যাপারে তারা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন।
সালেহা রহমানের মেয়ে নিলুফার ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, গত ২০ মে তার মাকে অসুস্থ অবস্থায় যশোর আড়াই শ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই নারীর শরীরে রক্ত দেয়ার কথা বললে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওয়ার্ডের সেবিকারা রোগীর শরীর থেকে ক্রসম্যাচিং করার জন্য রক্ত সংগ্রহ করেন এবং স্বজনদের দিয়ে হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে পাঠান। স্বজনরা ব্লাড ব্যাংকে ক্রসম্যাচিং করার জন্য নমুনা দিলে সেখানে কর্মরত জালাল উদ্দিন ‘বি’ পজিটিভ বলে রিপোর্ট দেন। যার রেজি: নম্বর ২৩৫০। রিপোর্ট হাতে পেয়ে রোগীর স্বজনরা তিন ব্যাগ ‘বি’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করলে সেই রক্ত রোগীর শরীরে দেয়া হয়। এতে করে গত মঙ্গলবার তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকলে তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের ডাক্তাররা আবারো রোগীর শরীরে রক্ত দিতে বলেন। তখন রোগীর স্বজনরা ব্লাড ব্যাংকে গেলে আবারো রোগীর রক্তের ক্রসম্যাচিং করেন। তখন দেখা যায় ওই নারীর রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ। এ সময় রোগীর স্বজনরা আরো নিশ্চিত হতে বেসরকারি একটি ক্লিনিক থেকে রক্তের গ্রপিং করলে সেখানেও ‘এ’ পজিটিভ রিপোর্ট আসে। অথচ ইতঃপূর্বে তার শরীরে তিন ব্যাগ ‘বি’ পজিটিভ রক্ত দেয়া হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার সেলিম রেজা বলেন, ব্লাড ব্যাংকে এ ধরনের ভুল রিপোর্ট মেনে নেয়া যায় না। ভুল কোথায় হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, সালেহা রহমানের শরীরে ভুল গ্রুপের রক্ত দেয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।
তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ জানান, রোগীর স্বজনরা মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জালাল উদ্দিন ও পিন্টু নামে দুইজনের কাজে দায়িত্বহীনতার বিষয়টি জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেশ কিছুদিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্র্মরতদের রূঢ় আচরণে অতিষ্ঠ রোগী ও তাদের স্বজনরা। কয়েকদিন আগে অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামে পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমঝোতা করে তড়িঘড়ি করে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়। হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অন্যান্য মৃত্যুর ক্ষেত্রে ডেথ সার্টিফিকেট পেতে ঘাম ঝরে যায়, সেখানে ওই নারীর ডেথ সার্টিফিকেট রাতারাতি কিভাবে হলো সেটিই এখন প্রশ্ন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা