১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মৃত প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ

বিদ্যালয় তহবিলের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে
-

কিশোরগঞ্জের আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন শোকরানার বিরুদ্ধে মৃত এক প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণীর সনদ তৈরি করে তার প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শ্রেণীর দুই কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক শোকরানা বিভিন্ন সময়ে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন এবং স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিদ্যালয় তহবিলের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাবু শিক্ষক শোকরানাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৭ জুলাই মারা যান কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনসুর আলী। তার মৃত্যুর সাড়ে পাঁচ মাস পর, ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর এবং আর মৃত্যুর প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর, ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি তার স্বাক্ষর দিয়ে তৈরি করা অষ্টম শ্রেণীর দু’টি একাডেমিক সার্টিফিকেট দিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে দু’জনকে নিয়োগ দেয়া হয়ে।
অভিযোগ উঠে ওই সার্টিফিকেটগুলো তৈরি করেন শিক্ষক মোকারম নিজে। এরপর তাদের নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নেন কয়েক লাখ টাকা। সম্প্রতি মৃত শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা ভুয়া সার্টিফিকেটের বিষয়টি ধরা পড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দেহুন্দা উচ্চবিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আবদুছ ছালাম। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মনসুর আলী মারা যাওয়ার পর তার স্বাক্ষরে যে দু’টি অভিজ্ঞানপত্র তৈরি করা হয়েছে, সেটি ভুয়া ও অগ্রহণযোগ্য। এ ছাড়া জীবদ্দশায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে উনার স্বাক্ষরিত কাগজপত্রে দেয়া স্বাক্ষরের সাথে এ দু’টি অভিজ্ঞানপত্রের স্বাক্ষরেরও মিল নেই। তাই এটি বাতিলযোগ্য।
গত ২৮ মার্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নতুন কমিটি এলে ভুয়া নিয়োগের ব্যাপারটি সামনে আসে। নতুন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাবুর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান, ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন শোকরানা দু’জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। বিষয়টি আমাদের কাছে ধরা পড়েছে। প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে এমনটি হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রধান শিক্ষক মোকাররম বিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে গত রোববার প্রধান শিক্ষক শোকরানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।


আরো সংবাদ



premium cement