ইঁদুর তাড়াতে লোকায়ত ‘তালপাতার ব্যবহার’
- আব্দুর রাজ্জাক ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
প্রাণবৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় ইঁদুরের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে ইঁদুর ফসল ও কৃষকের শত্রু হিসেবে হানা দেয়। জমির শস্য ও গোলার ফসল রক্ষার্থে ইঁদুর না মেরেও লোকায়ত পদ্ধতির মাধ্যমে ফসল রক্ষা করে আসছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষক।
গতকাল রোববার সরেজমিনে উপজেলার নালী ইউনিয়নের হেলাচিয়া চকে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে পাকা ও আধা পাকা বোরো ধানের বাম্পার ফলন। এই চকের একবারে পাশ দিয়ে রয়েছে কাঁচা মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়শসহ অন্যান্য সবজি খেত। ধান খেতের মধ্যে মধ্যে বাঁশের টুকরো পোঁতা, তার সাথে বেঁধে দেয়া হয়েছে একটি করে বড় শুকনো তালপাতা (স্থানীয় ভাষায় তালের ডাইগা)। আর নেই তালপাতার ওপর কয়েকটি পাখি ওড়াওড়ি করছে, আবার তালপাতায় বসে পোকামাকড় খাচ্ছে।
হেলাচিয়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক আতাব আলী বলেন, ক্ষেতের ইঁদুর তাড়াতে ও পাখি বসতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। এতে জমিতে ইঁদুরের উপদ্রব কমে যায় এবং ফলনও ভালো পাওয়া যায়। আর ইঁদুর মারার ঝামেলা হয় না।
গাংডুবি গ্রামের কৃষক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনীন্দ্র মণ্ডল বলেন, ইঁদুর অনেক ক্ষেতের ধান গাছের গোড়া কেটে ফেলে। ক্ষেতে অনেক বড় বড় গর্ত তৈরি করে পাকা ধান নিয়ে সেই গর্ত ভরে। দিনের বেলা মানুষের উপস্থিতির কারণে তারা কম আক্রমণ করে। তবে রাত হলে উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এই তালপাতা ব্যবহার করা হয়েছে। রাতে শুকনা তালপাতা বাতাসে নড়ে উচ্চ শব্দে জন জন করে উঠে, এ শব্দে ইঁদুর পালিয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গ কৃষি গবেষক সুবীর সরকার বলেন, ইঁদুর না মেরে তা তাড়ানোর জন্য এটি বিলুপ্তপ্রায় পরিবেশবান্ধব আদি পদ্ধতি। তবে তালের ডাইগার অপ্রতুলতা এবং আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহারে এই পদ্ধতি এখন চোখে পড়ে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম বলেন, এই লোকজ পদ্ধতিতে ইঁদুর দমন করা খুব কম কৃষকরাই করছেন। এটা পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না এবং এটা তৈরিতে খুব বেশি টাকারও দরকার হয় না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা