আদমদীঘিতে ধানের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করে আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা
তাদের রাতারাতি ধনী হওয়ার গোমর- বগুড়া অফিস ও আদমদীঘি সংবাদদাতা
- ০২ জুন ২০২৪, ০১:১৫
উত্তরাঞ্চলের মধ্যে চিকন ধান উৎপাদনে শীর্ষে বগুড়া, নওগাঁ ও নাটোর জেলা। এই তিন জেলার মধ্যে বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চল আদমদীঘি উপজেলার আড়তদার ও ব্যবসায়িরাই নিয়ন্ত্রণ করে এ অঞ্চলের চিকন ধানের বাজার দর।
আদমদীঘি ও পাশের আবাদপুরের ধান ব্যবসায়ীরা জানান, এ অঞ্চলের মধ্যে আবাদপুর হাটে ধানের বাজার দর সবচেয়ে বেশি থাকে। এত বেশি দরে কৃষক আর কোনো হাটে ধান বিক্রি করতে পারেন না। মৌসুমে প্রতি দিন এ বাজারে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার মণ ধান কেনাবেচা হয়।
এ ছাড়া আদমদীঘির বিভিন্ন আড়তে আমদানি হয় অতি চিকন লম্বা জিরা শাইল ধান। এ ধানের কদর কুষ্টিয়া খাজা নগর, নওগাঁ, মহাদেবপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঈশ্বরদীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মিলারদের মধ্যে (চালকল মালিক) সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া জিরা শাইল ধান থেকে মিনিকেট, নাজির শাইল, জিরা শাইল, বিভিন্ন জাতের ও বিভিন্ন নামের চাল তৈরি হয় এখানে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, জিরা শাইল ধান মূলত ভারতীয় জাতের। কৃষক ও চাল ব্যবসায়ী চালকল মালিক ও ভোক্তাদের চাহিদার কারণে এ ধানের চাষ বিস্তার লাভ করেছে। ভারত থেকে এ ধানের বীজ প্রথমে বাংলাদেশে আসে। জিরা শাইল চার জাতের ধানের মধ্যে রয়েছে- রাশিয়ান জিরা শাইল, জিরা শাইল, সুগন্ধি জিরা শাইল ও মাঝারি জিরা শাইল। দুই যুগ আগেও এ ধানের জাত বাংলাদেশে ছিল না। চিকন এ ধানের আবাদ করতে সারের ব্যবহার কম করতে হয়। বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ৩০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। দরও খুব ভালো পাওয়া যায়। এ জন্য কৃষক এ ধান চাষে বেশি আগ্রহী।
বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, রাজশাহী জেলার বেশির ভাগ জমিতে জিরা শাইল ধানের আবাদ হয়। প্রতি বছর ধান চাষের আওতা বাড়ছে। আমন মৌসুমেও এ ধান চাষ করা যায়। মৌসুমে জিরা শাইল এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও মৌসুমের আগে বা পরে জিরা শাইল ধান বিক্রি হয় বারশ’ থেকে চৌদ্দশত টাকা মণ দরে।
আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন ধানের আড়ত ঘুরে এবং একাধিক ধান বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেজি ও স্থানীয় সেরের মারপ্যাঁচে বিক্রেতাদের ঠকানো হয়। ৩৭ কেজি ৫০০ গ্রামে স্থানীয় এক মণ (৪০ সের)। কিন্তু এক বস্তা ধানের ওজন ধরা হয় ৭৮ কেজি সমান দুই মণ। বাংলা হিসেবে দুই মণ সমান ৭৫ কেজি। আড়তদাররা ধান কেনার সময় চাষিদের কাছ থেকে দুই মণের হিসাবে ৭৭ থেকে ৭৮ কেজি করে মেপে নেন। অন্য দিকে আড়তদাররা যখন মহাজনদের কাছে ধান বিক্রি করেন, তখন তারা ৭৬ কেজিতে দুই মণ ধরে দেন। এভাবে তারা প্রতি বস্তায় প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে দুই কেজি করে ধান বেশি নিয়ে নেন। কোনো আড়তদার এক হাজার বস্তা ধান যে দামে কিনবে সেই দামেই যদি বিক্রি করেন, তাহলেও তার কমপক্ষে দুই হাজার কেজি ধান অতিরিক্ত থাকে। এই দুই হাজার কেজি সমান ৫২ মণ ২৬ সের। এভাবেই রাতারাতি ধনী হচ্ছেন আদমদীঘির ধান ব্যবসায়ীরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা