১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সরকার নির্ধারিত ধানের দর পাচ্ছেন না কৃষকরা

সাদুল্লাপুরে বাম্পার ফলন
ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশা নিয়েই বিক্রির জন্য বস্তায় ধান ভরছেন কৃষকরা : নয়া দিগন্ত -

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১৫ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। সে মোতাবেক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় এক লাখ এক হাজার মেট্রিক টন ধান। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার এ উপজেলায় অনেকটা ভালো ফলন হলেও সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের বরাদ্দ অপ্রতুল। ফলে অনেক কৃষক তাদের ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি নির্দেশানুযায়ী উপজেলার দু’টি খাদ্যগুদামে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি ৩২ টাকা দরে ১ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। আর চুক্তিবদ্ধ মিল-চাতাল মালিকদের কাছ থেকে চাল কেনা হবে ৫ হাজার ৩২ মেট্রিক টন। সরকারি দরের চেয়ে বর্তমান খোলাবাজারে প্রতি মণ ধান ৩০০ টাকা কমে বেচাকেনা হচ্ছে। এতে কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। বরাদ্দকৃত ধান কৃষকদের কাছ থেকে কেনার পরেও তাদের ঘরে আরো অন্তত ৯৯ হাজার মেট্রিক টন ধান থাকবে।
উত্তর কাজীবাড়ী সন্তোলা গ্রামের কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, খুচরা ধান ব্যবসায়ীরা সব সময় ধানের দাম কম বলে থাকেন। তারা নানা কৌশলে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কেনার চেষ্টা করেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামগঞ্জে শুকানো নতুন মোটা জাতের প্রতি মণ ধান ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর চিকন জাতের বিক্রয় হচ্ছে ১ হাজার থেকে এক হাজার ৫০ টাকায়। অথচ সরকারিভাবে প্রতি মণ ধান কেনা হবে ১ হাজার ২৮০ টাকায়। বাজার পরিস্থিতির এমন তারতাম্যের সুযোগে স্থানীয় বড় বড় ধান ব্যবসায়ীরা কম দামে ধান কিনে বিশাল মজুদ গড়ছেন।
এ দিকে কৃষি বিভাগ বলছে, এ উপজেলায় প্রতি বিঘায় ২২ থেকে ২৩ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া জানান, অঞ্চলভেদে এবার প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা। উৎপাদনের সাথে ব্যয়ের সঙ্গতি রেখে সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা না হলে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হবে।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ এইচ এম তৌহিদুল্লাহ বলেন, সরকারি খাদ্যগুদামের সংখ্যা না বাড়ানো পর্যন্ত অনেক কৃষক সরকার নির্ধারিত দরে ধান বিক্রি করতে পারবেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মতিউল আলম বলেন, অনলাইনে কৃষকদের আবেদন পূর্বক লটারির মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওছার হাবিব বলেন, সরকারিভাবে ক্রয় অভিযান শুরু হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় নির্দিষ্ট সংখ্যক কৃষক ও মিল-চাতাল মালিকরা সরাসরি খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement