তজুমদ্দিন হাসপাতালে নাজুক চিকিৎসাসেবা
জনবল সঙ্কট ও ডাক্তারদের খামখেয়ালিতে- হেলাল উদ্দিন লিটন তজুমদ্দিন (ভোলা)
- ২৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সঙ্কট ও ডাক্তারদের খামখেয়ালিতে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাসহ বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। উপজেলাসহ মেঘনার বুকে জেগে উঠা চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা তজুমদ্দিন হাসপাতাল।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তার শাহনাজ শারমিন জরুরি রুমে বসে আউটডোরের রোগী দেখছেন। রোগীদের দীর্ঘ লাইন লেগে রয়েছে জরুরির সামনে। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার বর্তমান অবস্থা একেবারেই নাজুক দাবি রোগীদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুরু থেকেই ৫০ শয্যা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও জনবল সঙ্কট তখন থেকেই লেগে আছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং আবাসিক চিকিৎসকসহ ১৫টি পদের মধ্যে ৮টি শূন্য। নার্স, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ ১১৬ পদের বিপরীতে ৫৩টি পদ শূণ্য রয়েছে।
সামান্য সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এলেও ডাক্তাররা রেফার করেন ভোলা সদর হাসপাতালে। আর জেলা সদরে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ করে অনেক রোগীর পক্ষে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। হাসপাতালের দেয়ালে রোগীদের সরবরাহে ওষুধের বিশাল তালিকা টানানো থাকলেও অধিকাংশ ওষুধই সরবরাহ থাকে না কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালে আসা গরিব রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কেনার জন্য ডাক্তাররা একটি প্রেস্ক্রিপশন ধরিয়ে দেন। এ যেন গরিব রোগীদের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা’র মতো।
মাত্র দুইজন ডাক্তার দিয়ে চলছে ইনডোর, আউটডোর ও জরুরি বিভাগ। আর এতে লাইনে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন বয়স্ক রোগী, শিশু ও নারীরা।
শম্ভুপুর ইউনিয়নের খাসেরহাট এলাকার রেখা বেগম বলেন, ‘আমার একমাসের বাচ্চা অসুস্থ আউটডোরে টিকিট কেটে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। কখন ডাক্তার দেখাতে পারব তাও বলতে পারি না।
চাঁদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও চাঁদপুর নুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোতাহার হোসেন বলেন, আমার বাচ্চা নাফিসাকে হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে তিনটি টেস্ট দেন। হাসপাতালের ল্যাবে টেস্ট করাতে গেলে ল্যাব ট্যাকনিশিয়ান সারা দিনই অনুপস্থিত ছিলেন, তবে উত্তম কুমার নামে ব্রাক এনজিও’র এক কর্মীকে দিয়ে টেস্ট করানো হয়। উত্তম জানান, কাগজ না থাকায় আপনি রিপোর্ট মোবাইলে ছবি তুলে নেন। তিনি আরো জানান, টেষ্টের ফি নিলেও কোনো রশিদ সরবরাহ করা হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল্লাহ আল মর্তুজা হাসপাতালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারবেন না। পরে সাংবাদিক পরিচয়ে হাসপাতালে থাকা একমাত্র ডাক্তার শাহনাজ শারমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে ও অফিসের কথা বলে কৌশলে সব বিষয় এড়িয়ে যান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা