১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৬০ কিলোমিটার দুর্ঘটনাপ্রবণ

এক বছরে ৩০ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
-

দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্যান্য গাড়ির পাশাপাশি বিগত এক বছরে সড়কের ৬০ কিলোমিটার এলাকায় শুধু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন আরোহী। বেপরোয়া গতি, ঝুঁঁকিপূর্ণভাবে ওভারটেক ও হেলমেট ব্যবহার না করা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিন দিন গাড়ির চাপ বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহের একমাত্র সড়ক পথ এটি। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করলেও গাড়ির চাপ কমছে না। সড়কটি আট লেনে উন্নিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো এ মহাসড়ককে নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংযোজন করা হলেও কমছে না দুর্ঘটনা।
গত এক বছরে মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ধুমঘাট থেকে সীতাকুণ্ডের সিটি গেট পর্যন্ত অংশে অন্তত অর্ধশত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। সর্বশেষ গত ৯ মে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী মসজিদের মুয়াজ্জিনের হাফেজ সাইফুল ইসলাম নিহত হন। এর আগে উপজেলার সুফিয়া রোডে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বীর মুক্তিযোদ্ধা জানে আলম চৌধুরী নিহত হয়েছেন। বিএসআরএম এলাকায় বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান মোহাম্মদ মামুন। গত ২১ ডিসেম্বর মিঠাছড়ায় বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হন কলেজ ছাত্র হাসান আল বান্না। গত ৪ নভেম্বর ছোট কমলদহে মোটরসাইকেল আরোহী তিন স্কুলছাত্র নিহত হয়। ১১ নভেম্বর ছোট কমলদহে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী বাসু দেব নিহত হন। গত ১৭ অক্টোবর করেরহাটে মোটরসাইকেল আরোহী রুমি আক্তার নিহত হন। বেশ কয়েকটি হাইওয়ে থানা, ফাঁড়িসহ বিভিন্ন হাসপাতালসূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন রুটে প্রায়ই কিছু দূরপাল্লার বাইক রাইডার ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালায়।
অনেক মোটরসাইকেল আরোহীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে কেবল ট্রাফিক আইন থেকে রক্ষা পেতে দায়সারা হেলমেট ব্যবহার করেন। ছোটখাটো কোনো আঘাত মোকাবেলা করতেও সক্ষম নয় তা।
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, আবেগের বশে মোটরসাইকেল সন্তানের হাতে তুলে দেয়ার সময় ভাবছি না যে, হয়তো এর ফলে সন্তানকে চিরতরে হারাতেও হতে পারে। পুলিশ অধিকাংশ মামলা করছে মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে। কারো লাইসেন্স নেই, কখনো আবার চালক কিংবা আরোহীর মাথায় হেলমেট নেই, কারো ডকুমেন্ট ফেল। আইন প্রয়োগ করে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। সচেতনতার বিকল্প নেই।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, দেশের সর্বত্র কিশোর-যুবকদের হাতে বেশি গতির মোটরসাইকেলের ছড়াছড়ি। এগুলো ক্রয় ও ব্যবহারে নিয়মকানুন নেই, নেই মনিটরিং ব্যবস্থা। মোটরসাইকেল চার চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁঁকিপূর্ণ। এ জন্য সহজলভ্য করে মোটরসাইকেলের ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement