আতঙ্কিত জনপদের নাম লোহাগড়া

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে একজন সাবেক চেয়ারম্যানসহ তিনজন খুন হয়েছেন। খুনের ঘটনার পর স্থানীয় জনমনে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এসব খুনের ঘটনায় পুলিশের কোনো পদক্ষেপেই সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হতে পারছেন না।
লোহাগড়া উপজেলা একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত। গ্রাম্য কোন্দল আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জনপ্রতিনিধি আর মাতব্বরদের আশ্রয়-প্রশয়ে সঙ্ঘাত, সহিংসতা এ যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। অব্যাহত খুনের ঘটনায় উপজেলা নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় ভাটা পড়েছে।
জানা গেছে, গত ১০ মে লোহাগড়া বাজার থেকে একটি সালিস বৈঠকে যোগদানের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও মল্লিকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার মোস্তফা কামাল কুন্দশী এলাকার ছমীর শিকদারের বাড়ির সামনে নিজের মোটরসাইকেলটি রেখে বাড়ির ভেতরে যান। কিছুক্ষণ পর মোস্তফা মোটরসাইকেলটি আনার জন্য সেখানে গেলে দুর্বৃত্তরা গুলি করে। ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব ভাড়াটিয়া কিলার সাজেদুল মল্লিকসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে।
চেয়ারম্যান মোস্তফা খুনের ঘটনার একদিন পর ১১ মে রাতে চর মঙ্গলহাটা গ্রামে রিজিয়া বেগম নামে একজন বৃদ্ধ মহিলাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে জানালার গ্রিলের সাথে বেঁধে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। নিহত রিজিয়া চর মঙ্গলহাটা গ্রামের মরহুম শিক্ষক তবিবর রহমানের স্ত্রী এবং যুবলীগ নেতা রবিউল কবীরের মা। এ ঘটনার কোনো ‘ক্লু’ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
দুই খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১২ মে রাত ৮টায় লক্ষ্মীপাশা এলাকার কলা ব্যবসায়ী কাসেম খানের বাড়ি সংলগ্ন সড়কে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ফয়সাল মুন্সী নামে একজন ভ্যানচালককে ছুরিকাঘাতে খুন করে ভ্যান ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত ফয়সাল তেঁতুলিয়া গ্রামের আহম্মদ মুন্সীর ছেলে।
এ সব বিষয়ে লোহাগড়া থানার ওসি কাঞ্চন রায় জানান, চেয়ারম্যান, বৃদ্ধা এবং ভ্যানচালক খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যান খুনের ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। বৃদ্ধ রিজিয়া ও ভ্যানচালক ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্তকাজ চলছে এবং খুব সহসাই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।