১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সেতু আছে, দুই পাশে সড়ক নেই ২২ বছর যাবৎ

অর্ধকোটি টাকার সেতুতে মই বেয়েও ওঠা যায় না
অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর দুই পাশে ফাঁকা : নয়া দিগন্ত -

পাবনার চাটমোহরের নিমাইচড়া ইউনিয়নের সমাজ, বলচপুর, মিয়াপাড়া গ্রাম ও পাশের ভাঙ্গুড়া উপজেলার গদাইরূপসি, বানিয়াবহু, সাতবাড়িয়া, ময়দানদিঘী গ্রামের মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে করতোয়ার শাখা (সমাজ ঝিটকি কাটা) নদীর উপর ২০০১ সালে একটি সেতু নির্মিত হয়েছিল। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে ৭০ ফুট দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মিত হলেও সেতুর দুই পাশে রাস্তা করা হয়নি। এ কারণে প্রায় ২২ বছর ধরে সেতুটি অকেজো পড়ে আছে। জনসাধারণের কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। সেতুর রেলিংগুলো থেকে বালু-খোয়া খসে রড বেরিয়ে পড়ছে। আগে বর্ষাকালে এ এলাকার মানুষ সেতুর দুই পাশে মই লাগিয়ে সেই মই বেয়ে বেয়ে সেতুতে উঠত। এখন মই বেয়েও ওঠা যায় না।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর নিচের খালটি এখন পানিশূন্য। সেতুর নিচ দিয়ে এবং পাশের ধানক্ষেতের আইল দিয়ে এ এলাকার মানুষ চলাচল করে। সেতুতে কোনো মানুষ বা যানবাহন উঠতে পারে না।
বলচপুরের জোনাব আলী সরদার জানান, আগে নৌকায় এ খাল পার হতাম। সমাজ গ্রামের আঠারো পাড়ার মানুষসহ পাশের গদাইরূপসি, বানিয়াবহু, সাতবাড়িয়া, চণ্ডীপুর, ময়দানদিঘীসহ অন্তত সাত-আটটি গ্রামের মানুষ এ রাস্তায় আসা যাওয়া করে। প্রায় দুই যুগ আগে এ সেতুটি নির্মিত হয়। নির্মাণের বছরই সেতুর দুই পাশের মাটি ক্ষয়ে যায়। সেই থেকে অদ্যাবধি সেতুর দুই পাশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়নি। সড়ক থেকে প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি।
বলচপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস জানান, সেতুর এক পাশে গ্রাম আরেক পাশে কচুফুরী, মাগুড়া, চুঙারগাড়া, বোরামারাসহ পাঁচটি বিল রয়েছে। বিলের শেষে আবার গ্রাম। আমাদের বিলপাড়ের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল; কিন্তু সেতুর সুফল আমরা পাইনি। শুকনো মৌসুমে সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সুজন মাহমুদ জানান, রাস্তাটি উঁচু করে দুই পাশে ব্লক দিয়ে সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করা যায়। রাস্তা উঁচু হলে ভাঙ্গুড়া উপজেলার গদাইরূপসি থেকে এ রাস্তা দিয়ে বলচপুর, মিয়াপাড়া হয়ে সাতবাড়িয়া, ময়দানদিঘী পর্যন্ত যাতায়াত সহজ হবে।
নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর জাহান বেগম মুক্তি জানান, নির্মাণের পর থেকেই ব্রিজটি ব্যবহার উপযোগী না থাকায় মানুষের কষ্ট রয়েই গেছে। সেতু এবং সেতুসংলগ্ন রাস্তা সংস্কার করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করলে এ এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, এখন যে রাস্তাটি দৃশ্যমান, তা উঁচু করে দুই পাশ ব্লøক দিয়ে সংরক্ষণ করলে তবেই ব্রিজটি কার্যকর করা যাবে। কিন্তু এটি অনেক ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। আপাতত এ ব্যাপারে কোনো প্রস্তাবনা পাঠানো নেই।


আরো সংবাদ



premium cement