লালমনিরহাটে ভোটযুদ্ধ চাচা-ভাতিজার
- আসাদুল ইসলাম সবুজ লালমনিরহাট
- ১৯ মে ২০২৪, ০০:০৫
আসন্ন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের এমপি নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ এবং এমপির ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ এবার ভোট যুদ্ধে লড়ছেন একই পদে। প্রভাবশালী এই পরিবারের একই পদে চাচা-ভাতিজা প্রার্থী থাকায় শঙ্কায় আছেন সাধারণ ভোটাররা।
জানা গেছে, এমপি নুরুজ্জামান আহমেদ কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার আপন ছোট ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ টানা ১০ বছর ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দীর্ঘদিন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পদ ধরে রাখতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনি। তার প্রতীক ঘোড়া। একই পদে লড়ছেন তারই ভাতিজা সাবেক মন্ত্রীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ। একই পরিবারের দুই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী থাকায় সঙ্ঘাতের আশঙ্কায় আতঙ্কিত ভোটাররা।
দুই দিন পর ভোটগ্রহণ, তবুও জমে ওঠেনি ভাটের মাঠ
মনোনায়নপত্র জমা দিয়ে পোস্টার আর মাইকিং চালানো হলেও গণসংযোগ তেমনটা নেই এ উপজেলায়। এখানে চাচা-ভাতিজা ছাড়াও তারিকুল ইসলাম তুষার নামে আরো একজন চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী আছেন।
রাকিবুজ্জামান আহমেদ প্রথম ধাপেই সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ নিয়ে আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। দলীয় কার্যক্রমে তেমন সম্পৃক্ত না থাকলেও মন্ত্রীর ছেলে হিসেবে জেলা কমিটিতে নাম বসাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি তার। তবে জনপ্রতিনিধি হতে এবারই প্রথম কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাচার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন তিনি। তার প্রতীক আনারস।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বিগত দিনে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করেছেন। টানা ২১ বছর তুষভাণ্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন টানা ১০ বছর ধরে। এবার ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন তিনি।
একই বাড়ির নিচতলায় এক প্রার্থী, আর ওপর তলায় আরেক প্রার্থীর বসবাস। দলীয় কর্মীরা কে কার সাথে দেখা করছেন, ভোটের কাজ কে কার পক্ষে করছেন, সেটা নিয়েও ক্ষোভ চলছে প্রার্থীদ্বয়ের মধ্যে। এ কারণে অনেকটাই বিপাকে ভোটার কর্মী ও সমর্থকরা। একজনের পক্ষে কাজ করলে একই বাড়ির অপর জনের রোষাণলে পড়ার শঙ্কা দেখছেন তারা। সাধারণ ভোটাররা জানান, একজনের পক্ষে গেলে অপরজনের রোষাণলে পড়তে হবে। ভোট শেষে চাচা-ভাতিজা রক্তের টানে হয়তো মিলমিশ হয়ে যাবে। কিন্তু কর্মীদের প্রতি এই রোষাণলের রেশ সহজে কাটবে না।
স্থানীয় ভোটার আবু রায়হান, আজিজুল ও আনিচুর আলী বলেন, তারাই এমপি, তারাই মন্ত্রী, তারাই উপজেলার চেয়ারম্যান। সব কিছু একই পরিবারে। ভোট দিলেও তারা, না দিলেও তারা। তাই ভোট নিয়ে কেউ মাথা ঘামাই না।
রাকিবুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমার বাবা সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি হলেও আমি ব্যক্তি রাকিবুজ্জামান আহমেদ হিসেবেই জনগণের কাছে যাচ্ছি। ভোটে গণসংযোগ করছি। জনগণ সাড়া দিচ্ছেন।
মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, জনগণের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। জনগণও আমাকে সাড়া দিচ্ছেন। ওদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এমপি নুরুজ্জামান আহমেদ এলাকায় অবস্থান করছেন। জন প্রতিনিধিদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে কাবিখা, টিআরসহ সরকারি নানা সুবিধা দিয়ে ছেলের জন্য ভোট চাচ্ছেন। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মিটিং করছেন। কিছু কিছু বিষয়ে অভিযোগ দিয়ে ইসির সাড়া পেয়েছি। ইসি আন্তরিক হলে ভোট সুষ্ঠু হবে। আর সুষ্ঠু ভোট হলে জনগণ আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করবেন। দ্বিতীয় ধাপের ভোট আগামী ২১ মে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা