সিংগাইরে অর্ধযুগেও আলোর মুখ দেখেনি ৩৫ কোটি টাকার সেতু
- সোহরাব হোসেন সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহরে ধলেশ্বরী নদীর ওপর দু’পাড়ের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে ছয় বছরেও শেষ হয়নি প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সেতুর নির্মাণ কাজ। দু’দফা সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে না পারায় নতুন ঠিকাদারও নিযুক্ত করে কর্তৃপক্ষ। নতুন ঠিকাদারও কয়েক মাস ধরে কাজ বন্ধ রাখায় সেতু নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন দু’পাড়ের একাধিক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চান্দহরে ধলেশ্বরী নদীর ওপর ২০১৮ সালে ‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায়’ ৩৪ কোটি ৮৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫৩০ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি ৩১৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। দু’দফা সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে না পারায় চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ৩৪ কোটি ৩৩ লাখ এক হাজার ২০ টাকায় নতুন করে জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাথে চুক্তি করে কর্তৃপক্ষ। তাদের কাজের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয় ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। নতুন চুক্তি হওয়ার পর কয়েক মাস কাজ হলে ও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে ।
সরেজমিনে গত বুধবার জানা যায়, প্রায় ছয় বছরে এ ৩১৫ মিটার দীর্ঘ সেতুর দুই প্রান্তের অ্যাবাটমেন্ট ও উইং ওয়ালের কাজ শেষ হয়েছে। অপর দিকে, পাঁচটি পিলারের মধ্যে দু’টি পিলারের পায়ার ও ক্যাপ এবং একটি পিলারের পায়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে শুধুমাত্র। এতে শত শত বিঘা জমির উৎপাদিত ফসল ঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
চান্দহর বাজারের ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন দুঃখ করে বলেন, আমাদের মতো কষ্ট এ উপজেলায় কেউ করে কি না আমার জানা নেই। রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার মতো কোনো নাই। ব্রিজটি গলায় কাটা বিঁধে থাকার মতো অবস্থায় আছে।
স্থানীয় মাধ্যমিকের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, একবার খেয়া মিস করলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। এটা প্রচণ্ড গরমে খুবই অসহ্য ও যন্ত্রণাদায়ক। দ্রুত সেতুটি নির্মাণের জোর দাবি জানান তারা।
চান্দহর ইউপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বাদল বলেন, এ ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ ও গরু ব্যবসায় জড়িত। আমরা খুব বিপদে আছি।
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জান্নাত কনস্ট্রাকশনের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকৌশলী ইসমাইল হোসেন বলেন, কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। যথা সময়ে ব্রিজের কাজ শেষ না করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, চান্দহর সেতুটি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমি এমপি মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্নে সেতু সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে কথা বলব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা