জামালপুরে মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ
কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে কৃষকদের অনাগ্রহ- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ১৬ মে ২০২৪, ০০:০৫
যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র বিধৌত কৃষিনির্ভর জেলা জামালপুরের মাঠে মাঠে এখন দোল খাচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। বিস্তীর্ণ মাঠের দিকে তাকালে প্রশান্তিতে ভরে উঠে কৃষকের বুক।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণকের কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৪৮ হাজার মেট্রিক টন ধান-চাল সংগ্রের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধান ১২ হাজার ৬০১ টন, সিদ্ধ চাল ৩৪ হাজার ৪১৪ টন, আতপ চাল এক হাজার ৩৪ টন এবং গম ২৯৩ মেট্রিকটন সংগ্রহ করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরাত দিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: আসাদুজ্জামান (ভারপ্রাপ্ত) জানান, জামালপুর জেলায় এ পর্যন্ত ২৮ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। গত সোমবার ইসলামপুর, মেলান্দহ ও বকশীগঞ্জ উপজেলায় সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। তিনি আরো জানান, প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা, সিদ্ধচাল ৪৫ টাকা, আতপ চাল ৪৪ টাকা এবং গম প্রতি কেজি ৩৪ টাকা দরে সংগ্রহ করা হবে। আগামী ৩১ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত এই ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলমান থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ২২৯টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে অটোমেটিক-৩৫টি, হাস্কিং-১৭৫টি এবং আতপ চালের ৮টি চালকল রয়েছে। এসব মিলের মধ্যে দুইটি আতপ চালকল স্বয়ংক্রিয় এবং ৬টি আতপ চালকল আংশিক স্বয়ংক্রিয় রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলার সাত উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে এক লাখ ২৯ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে রূপসী, হাইব্রিড, কালো বোরোসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে। এসব ধানের মধ্যে হাইব্রিড ৫০ হাজার ৮০০ হেক্টর, উপশী ৭৮ হাজার ২৩০ এবং স্থানীয় জাতের ২৩০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে হাইব্রিড প্রতি হেক্টরে ৪.৯৮ টন, উফশী ৩.৯৯ টন এবং স্থানীয় জাত ১.৯৬ টন।
সূত্র জানায়, জেলায় চলতি মৌসুমে মোট ১৩৯টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করছে। মেশিন দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় কাটা ও মাড়াই করে দিচ্ছেন কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন মালিকরা। এই মেশিনে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে সময় লাগে মাত্র এক ঘণ্টা।
ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের বোলাকীপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, বর্তমানে ধানকাটার কামলার (মজুরের) মূল্য ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা। এক বিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করাতে ৬-৭ জন কামলার প্রয়োজন হয়। তিনি আরো বলেন, কম্বাইনড মেশিন দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করলে অনেক ধান ও খড় নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমার কামলা দিয়েই ধান কাটাতে পছন্দ করি।
মেলান্দহ উপজেলার জাফরশাহী পচাবহলা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, আমাদের ছোট ছোট ক্ষেত। ছোট ক্ষেতে মেশিন দিয়ে ধান কাটাও সম্ভব হয়ে উঠে না। তা ছাড়া ইচ্ছা থাকলেও প্রয়োজনের সময় কম্বাইনড মেশিন পাওয়া যায় না।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বলেন, দেশে শ্রমিক সঙ্কট ও দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন আমদানি করছে সরকার। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা শত ভাগ অর্জনের আশা করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা