১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শিক্ষকের দুই হাত ভেঙে দেয়ার ১১ দিনেও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ

নোয়াখালীতে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ
-

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে গত ৫ মে শ্রেণী কক্ষে ঢুকে মাদরাসাছাত্রীকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় শিক্ষককে মারধর ও পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দেয়ার ১১ দিন পরও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভবাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে গত শনিবার মুছাপুর ক্লুুজার সড়কে একটি বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মাদরাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। বক্তারা অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত রাজু ও নোমানকে গ্রেফতারের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার নোয়াখালী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুর উদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।
জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার গভার্নিং বডির সদস্য শেখ আবদুল্লাহ বলেন আমি ঢাকায় থাকি। বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয় আপনি প্রশাসনের সাথে কোনো যোগযোগ করেছেন কিনা- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন না, তবে মাদরাসার সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এ দিকে এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকায়। নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসাটি একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পর পর দুইবার এ মাদরাসাটি উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানে যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার প্রতিবাদ করার ভাষা নেই আমাদের। আমরা অবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।
জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল্লাহ আল মাহামুদ বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের ব্যাপারে প্রশাসনের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। প্রশাসন আশ^াস দিয়েছে তাদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিবেন।
উল্লেখ্য, জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় মুছাপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়াডের বাসিন্দা জহিরুল হকের ছেলে মো: রাজু ও তার সহযোগী নোমান গত ৫ মে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় মাদরাসার ক্যাম্পাসে ঢুকে। সে ষষ্ঠ শ্রেণীর কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। খবর পেয়ে মাদরাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষক কারী মো: সোহেল এগিয়ে আসলে রাজু ও তার সহযোগীরা মাদরাসার ভেতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। তাৎক্ষণিক একই মাদরাসার শিক্ষক হাসান এগিয়ে এসে সহকর্মী শিক্ষকের ওপর হামলা ও ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করে। একই দিন বিকেল ৫টায় ওই বিরোধের জেরে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের নেতা রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে সাত-আট জন কিশোর গ্যাং সদস্য শিক্ষক হাসানের দুই হাত ভেঙে দেয়।
এ ব্যাপারে মাদরাসার পক্ষে অধ্যক্ষ বাদি হয়ে একটি এবং আহত হাসানের পক্ষে তার শ^শুর সাহাব উদ্দিন বাদি হয়ে কোম্পাানীগঞ্জ থানায় দু’টি মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ছেলেগুলো এলাকায় নেই। আমি আশা করছি অতি অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।


আরো সংবাদ



premium cement