আপার ভদ্রা ও হরি-ঘ্যাঁংরাইল নদী পলিতে ভরাট
অল্প পানিতেই প্লাবনের দুশ্চিন্তা দুই পাড়ের মানুষের- কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা
- ১৫ মে ২০২৪, ০১:৪২
যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকার জলাবদ্ধতায় হরি ও ঘ্যাঁংরাইল নদীর দুই পাড়ের মানুষ দুর্ভোগের আশঙ্কায় রয়েছেন। নদীগুলো সচল রাখতে এলাকার বিভিন্ন বিলে টিআরএম প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর পলি উঠিয়ে বিলের মধ্যে রাখা হলে যেমন ফসল উৎপাদন হবে, তেমনি নদীর গভীরতাও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীসহ বিজ্ঞজনরা। তবে স্থানীয়দের আশঙ্কা পলি ভরাটের ফলে অল্প পানিতেই নদীর দুই পাড় প্লাবিত হতে পারে। এতে সৃষ্টি হতে পারে বন্যার।
জানা যায়, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৯টি উপজেলার পানি নিষ্কাশনের প্রধান নদী হরি, তেলীগাতি ও ঘ্যাঁংরাইল। এর শাখা নদী হাবর খালি, টেকা, মুক্তেশ্বরী, ডুমুরিয়ার হামকুড়া, মধ্যভদ্রা, জয়খালি নদী, পশ্চিম শালতা গোয়াচাপা, দেলুটি নদী। তিনটি জেলার ৯টি উপজেলায় ৩১৫ কিলোমিটার নদীতে ৯১টি সøুইচ গেটের কোনো কোনো রেগুলেটরের সাথে একাধিক বিল যুক্ত আছে। বর্তমান কেওড়া তলা বিলের সাথে কেওড়া তলা, মধুগ্রাম ও বর্ণি বিল, খুকশিয়া ৮ ভেন্টের সাথে ছোট বড় ২৭টি বিল যুক্ত। ভবদহ ২১ ও ৯ ভেন্টের সাথে ছোট বড় ৫২টি বিল যুক্ত।
যশোরের হরিণার বিল, কুমার সিং ও ক্যাদারিয়াসহ মোট ৫২টি বিল রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এসব বিলে ফসল উৎপাদনে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমি প্রায় অনাবাদি। এ এলাকায় মানুষের বসবাস রয়েছে প্রায় ২৫ লাখ।
তেলীগাতি ও ঘ্যাঁংরাইল ২৫ কিলোমিটার, হাবর খালি ৯ কিলোমিটার, এর উপনদী ও শাখা নদী টেকা মুক্তেশ্বরী, যশোর থেকে ভবদহ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। ঘ্যাঁংরাইল নদীটি ৫০০ মিটারের বেশি চওড়া থাকলেও বর্তমানে ৫০-৬০ মিটারের বেশি জোয়ার উঠে না। মুক্তেশ্বরী নদীর মোহনায় ভবদহের পাম্প মেশিন থাকলেও পলিতে পানি সরবাহ করতে পারছে না। যার ড্রেনেজ খাল মুক্তেশ্বরীসহ প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এ ছাড়া জিয়েলতলা, পাতিবুনিয়া, বাগআঁচড়াসহ মোট ৯১টি সøুইচ গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হয়।
হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী ২০১৮ সালে খনন করলেও সেটা আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। আপার ভদ্রা ও হামকুড়া নদী ২০ বছর পূর্ব থেকে অচল হয়ে রয়েছে। মধ্যভদ্রা ও জয়খালি নদী ২০১৯ সালে খনন করা হলেও সেটাও পূর্বের অবস্থায় অচল হয়ে পড়েছে। পশ্চিম শালতা খনন করা হলেও শাখা নদী গোনাখালি ছোট আকারে চলছে। গোয়াচাপা নদী পূর্ণ ভরাট থাকায় ঘ্যাঁংরাইল নদীতে পানি যেতে পারে না।
আমতলী/তালতলী ও কুলবাড়ি নদী এ বছর খনন করা হয়েছে। আর শালতা ভদ্রা হাবর খালি নদী সম্পূর্ণই উপনদীতে পরিণত হয়েছে।
ঘ্যাঁংরাইল অববাহিকার জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভাপতি ও সাবেক বাপাউবোর সদস্য মহির উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ১৯৬০ সালের পূর্বে এই অববাহিকায় গোন-বেগনে প্রায় ১৫-২০ কোটি ঘনমিটার পানি সঞ্চালিত হতো। পোল্ডার ব্যবস্থার পরে তা কমে দাঁড়ায় ২ থেকে আড়াই কোটি ঘনমিটারে। এ অঞ্চলে ১৯৮৪ সালের পর থেকে ডজন খানেক নানাবিধ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করলেও টিআরএম প্রকল্প ছাড়া আর কোনো প্রকল্প নদীর নাব্যতা সৃষ্টি ও ধরে রাখতে পারেনি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, টেকা থেকে হরি নদী খননের জন্য অর্থ বরাদ্দের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে হরি, শ্রী হরিনদী খর্ণিয়া ব্রিজ থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর দিকে খনন করা হবে। এ মুহূর্তে হরি-ঘ্যাঁংরাইল নদী খননের কোনো পরিকল্পনা নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা