চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রেন যোগাযোগ এখনো আধুনিক হয়নি
এ অঞ্চলে ব্রিটিশ রেল যোগাযোগের মাত্রা ছিল অনন্য- মিজানুর রহমান কুটু চাঁপাইনবাবগঞ্জ
- ১৫ মে ২০২৪, ০১:৩৯
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রেন যোগাযোগের আধুনিকায়নের দীর্ঘ দিনের দাবি এখন সময়ের আবশ্যকীয় চাহিদায় পরিণত হয়েছে। দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনা মসজিদ, রহনপুর রেলবন্দর, আম রাজ্যের পাদপীঠ ব্যাপক ভিত্তিক আধুনিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা ও ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্বের জন্য আধুনিক ট্রেন যাত্রায় প্রান্তিক এ জেলাকে নতুন করে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিল প্রাচীন গৌড় বাংলার গৌরবময় রাজধানী। তা ছাড়া ব্রিটিশ রেলের সব আধুনিকতা নিয়ে সে সময় এ অঞ্চলের রেল যোগাযোগের মাত্রা ছিল অনন্য। কিন্তু দেশ স্বধীন হবার পর থেকে প্রকট অবহেলার শিকার হয়েছে এ জেলার রেল উন্নয়ন। প্রান্তিক জেলা হওয়া সত্ত্বেও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে বাদ দিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় শহরকে ঘিরে রেলের আধুনিকতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের অধীন রাজশাহী থেকে ৭৬ জোড়া ট্রেন দেশের বিভিন্ন অংশে চলাচল করে। অথচ চাঁপাইনবাবগঞ্জে রয়েছে মাত্র ১২ জোড়া ট্রেনের শিডিউল। এর মধ্যে রয়েছে একটিমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকাগামী বনলতা এক্সপ্রেস। অথচ রাজশাহী থেকে শুধুই ঢাকাগামী মোট ট্রেনের সংখ্যা ৪টি। করোনা মহামারীর দোহাই দিয়ে ট্রেনগুলো প্রত্যাহার করা হলেও আজ অবধি ট্রেনগুলো চালু হয়নি।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের মতে, পুরো রাজশাহীর ট্রেন ব্যবস্থাপনাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিয়ে আসতে দরকার শুধু একটি শক্ত সরকারি সিদ্ধান্ত। ট্রেন ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে জেলার স্থলবন্দর সোনা মসজিদ আর রহনপুরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশের আমের রাজধানী খ্যাত এ জেলায় প্রতি আম মৌসুমে হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্য হয়। প্রাচীন নগরীর ইতিহাস ঘিরে পর্যটনের হাতছানিতে জেলায় কম মানুষ আসা-যাওয়া করে না! চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধান উৎপাদনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আধুনিক অটো রাইস মিলের বিশাল শিল্পাঞ্চল।
ইতোমধ্যে স্থানীয় এমপি আব্দুল ওদুদের প্রচেষ্টায় সোনা মসজিদ পর্যন্ত রেলপথ বর্ধিতের প্রস্তাবনা আলোর মুখ দেখেছে। সোনা মসজিদ পর্যন্ত ৩টি স্টেশনসহ প্রকল্পটিতে স্থলবন্দরের সাথে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সম্ভাবনাকে চিহ্নিহ্নত করা হয়েছে।
রহনপুর রেলবন্দরটিকে আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। জেলার আমনুরায় সমীক্ষা শেষ হয়েছে। রেলের নিজস্ব মাটি থাকায় মাটি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে না রেল মন্ত্রণালয়কে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মাত্র একটি আন্তঃনগর ট্রেন দিয়েই গত এপ্রিলে রাজস্ব এসেছে ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৫২৪ টাকা। আর ২০২২-২৩ এ রাজস্ব অর্জিত হয়েছে ৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭৭ টাকা।
রাজশাহী থেকে চাঁপাই পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ৫২ কিলোমিটার। ২০১৭-১৮ সালে পুরো রেলপথটি আধুনিকায়ন করায় বনলতা এক্সপ্রেস রাজশাহী পৌঁছতে সময় নেয় মাত্র ৪৫-৫০ মিনিট।
রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রিশিডিউলের দাবি জানিয়ে এমপি আব্দুল ওদুদ জানান, ট্রেন যোগাযোগে প্রান্তিক জেলা হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মূল্যায়ন করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনা মসজিদ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তখন আর চাঁপাইনবাবগঞ্জকে অবমূল্যায়ন করার সুযোগ থাকবে না। ২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও তিনি জানান, যা নিকট ভবিষ্যতে ট্রেন যাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা