১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
রাবির বোটানিক্যাল গার্ডেন

অযত্ন-অবহেলায় ১৭০ প্রজাতির বনজসম্পদ বিলুপ্তির পথে

রাবির বোটানিক্যাল গার্ডেনে অযন্তে পড়ে থাকা পৃথিবীর প্রশস্ততম বাওবা বৃক্ষ : নয়া দিগন্ত -

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেবল সৌন্দর্যের আধারই নয়, এটি একটি বনজসম্পদে ঠাসা উন্মুক্ত প্রান্তর। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন। সেখানে প্রায় ১৭০ প্রজাতির দুষ্প্রাপ্য বনজ উদ্ভিদ রয়েছে। লোকবল সঙ্কটের পাশাপাশি উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে এখন নষ্ট হতে বসেছে বিলুপ্তপ্রায় এসব বনজসম্পদ। বাগানটিতে শিল্পের কাঁচামাল, ঔষধি, ফলদ, দামি কাঠ ও তেলজ উদ্ভিদসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা উদ্ভিদ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বোটানি বিভাগের সুষ্ঠু তত্ত্বাবধানের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে এটি।
গার্ডেনটি ১৬ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেখানে ২৫ জনের অধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র দুইজন। দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকলেও বাগানটি সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
এই গার্ডেনে ‘বাওবা’ ট্রি নামের এক ধরনের বৃক্ষ আছে, যা পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ততম বৃক্ষ বলে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে ৫০০টি পাম অয়েল গাছ। বোটানি বিভাগ সূত্রে জানা যায় রক্তচন্দন, আকাশমণি, অর্জুন, অশোক, বাবলা, বাঁদরলাঠি, বেট ঝপ, বহলা, বনকাঁঠাল, বোটল ব্রাশ, ছাতিম, দেবদারু, ডুমুর, ইউক্যালিপটাস, গামার, গর্জন, হরিতকী, জয়তুন, চায়না জাও, কাঞ্চন (লাল), রক্তকরবি, কাঁঠালচাপা, কাঠবাদাম, ককশা, খয়ের, কৃষ্ণচূড়া, মেগনোলিয়া, মেহগনি, মহুয়া, নাগেশ্বর, রাখালশসা, পান্থপাদব, পলাশ, রাবার, শরিফা, স্বর্ণাচাঁপা, সেগুন, শিশু, বেরিকেট ও বটের মতো নামীদামি ও দুর্লভ গাছ রয়েছে এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে।
এখানে আরো রয়েছে থাই কাঠগোলাপ, চাইনিজ দেবদারু, জহুরি চাঁপা, কাঠ লজ্জাবতী, শ্বেত চাঁপা, নীল চিতা, পারুল, কেশিয়া নুড়–শা, পানপরাগ, রানীচূড়া, কৃবট, ইস্টার আপেল, মর্নিং গ্লোরি, হস্তিকর্ণ, জাকারান্তা, বাসক, মাধবী লতাসহ আরো অনেক দুষ্প্রাপ্য উদ্ভিদ। গবেষকরা বলছেন, বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি চেষ্টা করে তাহলে সঙ্কটগুলো দূর করে এটিকে একটি মডেল গার্ডেনে রূপান্তর করা সম্ভব।
বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, গার্ডেনটি দেশী-বিদেশী অনেক দামি ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদে সমৃদ্ধ। বর্তমানে জনবল সঙ্কট রয়েছে এখানে। প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে ১৬-১৮ জন মালি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র দুইজন। ফলে গার্ডেনটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথেষ্ট সহযোগিতা পেলে এটিকে একটি মডেল বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরিণত করা সম্ভব। বোটানি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহিদুল আলম বলেন, লোকবল সঙ্কটের কথা বর্তমান প্রশাসনের কাছে জানানো হয়েছে। প্রশাসন যদি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখে তাহলে খুব শিগগিরই এ সঙ্কট থেকে উত্তরণ হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, গার্ডেনটি বোটানি বিভাগের অধীনে। এর সার্বিক দেখভালের দায়িত্বও তাদের। তবে বিশেষ প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে লিখিতভাবে আবেদন জানাতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে। আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো লিখিত আবেদন আসেনি।
উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গাছের ওপর গবেষণা করার সুবিধার্থে ১০৫ প্রজাতির উদ্ভিদ নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এই বোটানিক্যাল গার্ডেনের। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আলী ইউনুসের হাত ধরে প্রায় ১৬ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয় বাগানটি। বর্তমানে বাগানটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বেও রয়েছে এই বিভাগটি।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশে মুসলিম কৃষকের ধানে আগুনকে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বলে প্রচার শিক্ষানুরাগী এস এম খলিলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ সিরিয়ার নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র! ইতিহাসের প্রথম : ৪০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক মাস্ক ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপ সৌদি আরবে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সচল ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ভারতীয় মিডিয়াতে ইসকনের ওপর হামলার খবর ভুয়া : সিএ প্রেস উইং ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মির্জা ফখরুল টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা ঢাকা সফর নিয়ে ভারতের এমপিদের ব্রিফ করলেন বিক্রম মিশ্রি রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন দুর্নীতি তদন্তে অগ্রাধিকার পাবে

সকল