১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
বরগুনার ৪ উপজেলা নির্বাচন

আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী

বাড়ছে গ্রুপিং, নেতাকর্মীরা বিভক্ত
-


দ্বিতীয় দফা তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ মে বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তৃতীয় দফা তফসিল অনুযায়ী বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। বরগুনা ও বেতাগী এ দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাসহ ১৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলার চিত্রও একই। তারা সবাই ভোটের মাঠে সক্রিয়।
তবে একই দলের পদধারী একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে নানা ধরনের গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। ফলে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের গলার কাটা এখন আওয়ামী লীগই। এক কথায় ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা বিভক্তি। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা কাকে রেখে কাকে ভোট দেবেন সেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। আবার কেউ কেউ প্রকাশ করছেন ভিন্নমত, তাদের মতে এবার নিবার্চনের মাঠে কর্মীদের মূল্যায়ন হবে, নেতাদেরও হবে জনপ্রিয়তা যাচাই। একই সাথে নির্বাচনে ফিরে আসবে ভোটের রাজনীতি এমনটাই বলছেন অনেকে।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বরগুনা সদর ও বেতাগী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ফোরকান দলের দায়িত্বে আছেন আনেক দিন ধরে। এর আগে তিনি উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বার (ইউপি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ফলে ভোট ব্যাংক নিয়েও এগিয়ে আছেন ওই নেতা। এবারের নির্বাচনে তিনি সক্রিয়ভাবে প্রার্থী হলেও দলের একটি বড় অংশ সমর্থন দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক নেতা খলিলুর রহমানকে। যিনি দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়া তিনি হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের দায়িত্বে থাকা (ইউপি) চেয়ারম্যান। উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে দলের একটি বড় অংশকে সাথে নিয়ে নেমেছেন ভোটের মাঠে। ভোটের যুদ্ধ করতে ইউপি চেয়ারম্যান থেকেও পদত্যাগ করেছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। উপজেলা পর্যায়ে এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে সভা করে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সাধারণ জনগণের মতে, আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর কোন্দলের ফলে দলীয় সমর্থকদের ভোট বিভক্ত হবে। এই সুযোগে সাধারণ মানুষের ভোটকে পুঁজি করে জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন অন্য কোনো প্রার্থী।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, দলের নেতাদের মধ্যে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় তাদের অনেককে জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে প্রকাশ্য বিভক্তি। তবে এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ বি এম গোলাম কবির বলেন, উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের স্থানীয় দলীয় প্রভাব পড়বে না। নির্বাচনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহসম্পাদক (শ্রম) ও বরগুনা জেলা বিএনপি নেতা ফিরোজ উজ জামান মামুন মোল্লা বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্ত হলো পাতানো ও অবৈধ সরকারের এ নির্বাচনে জেলা ও উপজেলার কোনো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন না। এর পরেও যদি কেউ করে থাকেন তাহলে তাকে দল থেকে প্রাথমিক ও দলীয় পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে।
বরগুনা সদরে উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। বেতাগী উপজেলা একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন রয়েছে। বামনা উপজেলা চারটি ইউনিয়ন রয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলা একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল