১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
মেহেরপুরে টিউবওয়েল ও সেচপাম্পে পানি উঠছে না

খাবার পানির সঙ্কট ঃ বিঘ্নিত সেচকাজ

সুপেয় পানির জন্য গ্রামীণ মহিলাদের লাইন : নয়া দিগন্ত -

খরতাপে পুড়ছে মেহেরপুর। হাঁসফাঁস করছে মানুষ, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি ও পাখি। এমন অবস্থার মধ্যে দেখা দিয়েছে পানির সঙ্কট। পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় মেহেরপুরের তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অনেক এলাকায় কৃষকরা সেচপাম্পেও ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। অনাবৃষ্টি, ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং পুকুর, খাল-বিল ভরাটে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে বলেও জানান তারা।
জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ শ্যালিকা, বাড়িবাঁকা, বুড়িপোতা ও গোভিপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি না ওঠায় মানুষ একদিকে খাবার পানি সঙ্কটে ভুগছে অপরদিকে চাষিরা ধানক্ষেতসহ অন্যান্য ফসলে সেচ দিতে গিয়ে ঠিকমতো পানি না পাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
বুড়িপোতা গ্রামের কৃষক শামীম জানান, গত সোমবার ১০ কাঠা ধানের জমিতে সেচ দিতে গিয়ে চার লিটার ডিজেল কিনতে হয়েছে। যেখানে অন্য সময় এক থেকে দেড় লিটার তেলে সেচ হয়ে যায়। এমন সমস্যার কারণে কেউ কেউ মধ্যরাতে আবার কেউ কেউ ভোররাতে মাঠে গিয়ে সেচ দিচ্ছেন। তাও কাক্সিক্ষত ফল পাচ্ছেন না। তাদের এলাকার বিভিন্ন মাঠে একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষকরা। প্রচণ্ড খরতাপে মাঠের ধান-পাট পুড়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা চোখে আঁধার দেখছেন।
গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের আমতৈল, মানিকদিয়া, কেশবনগরসহ কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া, ধলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই সুপেয় পানির সঙ্কট প্রকট হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণত মাটির নিচে ৫০-৬০ ফুট গভীরে পানির স্তর স্বাভাবিক থাকে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলোও ক্রমেই শূন্য হয়ে পড়ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৫-২০ ধরে তার বাড়ির টিউবওয়েলে পানি নেই। গত দুই-তিন সপ্তাহ থেকে ঘণ্টাব্যাপী মোটর চালাতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে অনেকের বৈদ্যুতিক মোটর।
ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা বলেন, ষোলটাকা ইউনিয়নে মোট ৬২১৫টি খানায় ছয় হাজার টিউবওয়েল রয়েছে। তিন-চার বছর থেকে এই ইউনিয়নের ৪-৫ গ্রামে বিশেষ করে চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই তিন মাস টিউবওয়েলে পানি থাকে না। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জের আশাদুল গাজী জানান, ভৈরব নদের পশ্চিম-দক্ষিণ এলাকার ভবরপাড়া, রতনপুর, বল্লভপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের নলকূপে পানি উঠছে না।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, পানির লেয়ার নিচে নেমে যাওয়ায় সেচপাম্পগুলোতে ঠিকমত পানি উঠছে না। বৃষ্টিপাতই একমাত্র সমাধান। তবে পাম্পগুলোকে ১০ থেকে ১৫ ফুট মাটি খুঁড়ে নিচে নামিয়ে দিলে কিছুটা ভালো পানি পাওয়া সম্ভব। তিনি আরো জানান, চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৯৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে।
গাংনী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, খাবার পানির সঙ্কটসহ নানা সমস্যা সমাধানে এরই মধ্যে ৭৫টি সাবমার্সিবল পানির পাম্প এসেছে। সেগুলো বসাতে এক মাস সময় লাগবে। তখন আর পানির সমস্যা থাকবে না।


আরো সংবাদ



premium cement
২৩ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বেক্সিমকোর দায়-দেনা ৫০৫০০ কোটি টাকা দোয়ারাবাজারে ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার এবার আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে : খাদ্য উপদেষ্টা কুলাউড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ আ‘লীগ নেতা গ্রেফতার সোমবার যেসব এলাকায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না হাবে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বঞ্চিত ৭৬৪ কর্মকর্তা পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা পাবেন দেওয়ানগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় গৃহবধু নিহত মদিনা রুটে ফ্লাইট বাড়িয়েছে বিমান বাংলাদেশ চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে বাসের ধাক্কা, নিহত ৩ ভারতের বিভিন্ন মসজিদে সমীক্ষা নিয়ে মোদিকে তুলোধুনো ওয়াইসির

সকল