বিলুপ্তির পথে মান্দার গাছ
- মুহাম্মদ মিজানুর রহমান (দাগনভুঞা, ফেনী)
- ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলা থেকে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মান্দার গাছ। উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার ধারে বনবাদাড়ে এ গাছ আগে প্রকৃতিতে শোভাবর্ধন করত। পাহাড়ি প্রজাতির অন্যসব গাছের কারণে এ গাছ ধীরে ধীরে গ্রামবাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। কদর কমে যাচ্ছে হাজার রকমের কাঠবৃক্ষের ভিড়ে। জ্বালানি হিসেবে কাঠের জোগান দিতে এ গাছটি বেশ জনপ্রিয়। শীতের শেষে যখন বসন্তের হাওয়া লাগে প্রকৃতিতে, তখন গ্রামবাংলায় মান্দার ফুলের সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায়।
বেশ কয়েক প্রজাতির মান্দার আছে আমাদের দেশে। তবে যে প্রজাতিটি দাগনভুঞা উপজেলার মানুষের কাছে অতিপরিচিত, সেটি হলো কাঁটা মান্দার। কেউ কেউ এটিকে মাদার ও পানিয়া মান্দার নামেও চেনেন। বইয়ের ভাষায় এর নাম পরিজাত। আঞ্চলিক ভাষায় স্থানভেধে মাদার, মান্দর, মন্দার, পালতে মান্দার, রক্তমান্দার, কাঁটা মান্দার ইত্যাদি নামে সবাই চেনে।
মান্দার বুনোগাছ হওয়ায় এর যতেœর প্রয়োজন পড়ে না। ঝোপঝাড়ে এমনিতেই বেড়ে ওঠে। কেউ কেটে না ফেললে অনেক বছর বাঁচে। এর ডাল কেটে লাগালেও গাছ হয়। কাঁটা মান্দার গাছের কোনোটির কাণ্ডের গায়ে ঘন ও প্রচুর কাঁটা থাকে। আবার কোনোটিতে কাঁটার পরিমাণ কম। ফাল্গুন মাসে গো-শালিক পাখিটি এ গাছকেই বাসাবাঁধার উপযুক্ত গাছ হিসেবে বেছে নেয়। বসন্তে যখন ফুল ফোটে, তখন এ গাছের শাখায় শাখায় নানা প্রজাতির পাখির বিচরণ চোখে পড়ে। কাঁটা মান্দার ফুলের পাপড়ির রং টুকটুকে লাল। অনেকটাই পলাশ ফুলের মতো দেখতে।
এটি নরম কাণ্ডবিশিষ্ট বৃক্ষ। শাখা-প্রশাখা ফ্যাকাসে ধূসর। অসংখ্য কালো বর্ণের কাঁটা দ্বারা কাণ্ড পরিবেষ্টিত। বাকল গভীরভাবে ফাটা। পাতা সবুজ। পরিপুষ্ট অবস্থায় হলদে হয়ে ঝরে পড়ে। একেকটি ফুলের মঞ্জুরিতে একাধিক ফুল থাকে। ফল পাকলে বহিত্বক ফেটে বীজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বীজ কালো ও মসৃণ। মাঝারি আকারের এ গাছটি সাধারণত ১৫ মিটারের মতো উঁঁঁচু হয়। বর্তমানে মান্দার গাছ বিলুপ্তির পথে। গ্রামে কিছু কিছু জায়গায় এখনো দেখতে পাওয়া যায়। পরিবেশবাদী এবং আমাদের সবারই উচিত এমন সুন্দর একটি গাছ যেন আমাদের থেকে হারিয়ে না যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা