টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টিকিট হোয়াটসঅ্যাপে
বগুড়ায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে- বগুড়া অফিস ও আদমদীঘি সংবাদদাতা
- ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
বগুড়ায় ট্রেনের টিকিট এখন অনলাইন বা কাউন্টারে পাওয়া যায় না। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কালোবাজারিদেরকে টাকা দিলেই তারা হোয়াটসঅ্যাপে টিকিট পাঠিয়ে দেয়। এমনকি ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য তাদের কাছেই অর্ডার দেয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে ৩৬০ টাকা মূল্যমানের একটি টিকিট পেতে আপনাকে গুনতে হবে ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশনকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ট্রেন চলাচল করে এই স্টেশন পথে। তবে এখানে সারা বছরই কাউন্টারে টিকিট মেলা ভার। টিকিট মিলবে কালোবাজারিদের কাছে এবং বেশি দামে। আর যেকোনো উৎসবে বা বড় ছুটির দিনে সেই টিকিট কালোবাজারিদের কাছ থেকে কিনতে হবে তিন-চার গুণ বেশি দামে।
এ ব্যাপারে নাঈম ইসলাম নামের সান্তাহার পৌর শহরের এক বাসিন্দা বলেন, আমার চাচাত ভাই ঢাকা থেকে সান্তাহারে আসবে ৯ এপ্রিল। তিনি কমলাপুর স্টেশনে গিয়েও অনলাইনে কোনো টিকিট কাটতে পারেননি। বিষয়টি আমাকে ফোনে জানানো হলে আমি বাধ্য হয়ে এক কালোবাজারির কাছ থেকে টিকিট ক্রয় করি। সান্তাহারে কালোবাজারি আমাকে শোভন চেয়ারের একটি টিকিট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়। টিকিটের গায়ে ৩৬০ টাকা মূল্য লেখা থাকলেও সেই কালোবাজারি আমার কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক হাজার টাকা নিয়েছে। সান্তাহার রেলওয়ে টিকিট কাউন্টারের আশপাশের কম্পিউটারের দোকান, মোবাইল ফোনের দোকান, পানের দোকান থেকে আপনি ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন। তবে এবার দোকানে টিকিট বিক্রির পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও কালোবাজারিরা টিকিট বিক্রি শুরু করেছে।
ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি বন্ধে গত বছর ১ মার্চ থেকে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ এমন সেøাগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাটতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিয়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে। সেই সাথে ঈদ উপলক্ষে এবারই প্রথম মোবাইলে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এবার ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রি শুরুর আগে রেলওয়ের কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন ওটিপি পাঠানোর এ পদ্ধতি নতুন চালু হওয়ায় টিকিট নিয়ে কারসাজি অনেকটা কমবে। কিন্তু ট্রেনযাত্রীরা বলছেন, এতে কারসাজি কমেনি, বরং বেড়েছে।
নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক টিকিট কালোবাজারি বলেন, করোনাকালীন যখন ট্রেন বাদে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ ছিল, তখন থেকেই আমি টিকিট কালোবাজারির সাথে জড়িত। ইতঃপূর্বে আমরা ট্রেনের সব টিকিট কেটে কাউন্টারের সামনেই কালোবাজারে বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন প্রকাশ্যে টিকিট বিক্রয় করতে পারি না। এখন অনলাইন থেকে ইচ্ছে মতো পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করি এবং ইচ্ছে মতো টিকিট বিক্রয় করতেও কোনো সমস্যা হয় না।
এ বিষয়ে সান্তাহার নিরাপত্তাবাহিনীর পরিদর্শক নূর এ নবী বলেন, ঈদকে সামনে রেখে কালোবাজারি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। আমাদের নিরাপত্তাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা মাঠে কাজ করছে। আশা করছি কালোবাজারিদেরকে গ্রেফতার করতে পারব।
এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, টিকিট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ জন্য আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা