১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
খেয়ে ফেলছে রান্না করা খাবারও

মিরসরাইয়ে লোকালয়ে বানরের উৎপাত

লোকালয়ে আসা বানর : নয়া দিগন্ত -


চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন ছেড়ে একের পর এক লোকালয়ে ছুটে আসছে বানর। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ। ফলমূল পাশাপাশি খেয়ে ফেলছে মানুষের রান্না করা ভাত।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলার পাহাড়গুলোতে একসময় গভীর বন ছিল, তেমনি ছিল নানান ফল-ফলাদির সমাহার। কাউফল, ত্রিফলা, আমড়া, জলপাই, কামরাঙ্গা, কলা, আম, জাম, কাউ থেকে শুরু করে শত রকমের ফল খেয়ে জীবন ধারণ করত বনের হরিণ, বানর থেকে শুরু করে নানান প্রজাতির পশুপাখি। বন মোরগ, লজ্জাবতী বানর থেকে হরিণ, শূকরের দল দেখা যেত এই বনে। কিন্তু এখন এসব প্রাণী খাবারের সঙ্কটে বিলীন প্রায়। বনে নেই কোনো বণ্যপ্রাণী, বন বিভাগ নানান বাণিজ্যিক গাছ আর নিজেদের সুবিধা নিয়েই ব্যস্ত। ভাবছে না কেউ বন্যপ্রাণীদের খাবারের সংস্থানের কথা।

উপজেলার খইয়াছড়া ইউনিয়নের নাপিত্তাছড়া ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দা কৃষক সুমন ত্রিপুরা জানান, তার ক্ষেতের ফসল, বাগানের সবজি, ফলমূল ধ্বংসের পাশাপাশি ঘরে ঢুকে ভাতও খেয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের বানরের দল। তিনি বলেন, এমনকি আমার ঘরের চালায় এখন বানর দলের বসতি। ফল-ফসল খেয়ে তো ক্ষতি করেই, মাঝেমধ্যে ঘরে ঢুকে ভাত খেয়ে চলে যায়। শিশুদের হাতের খাবার কেড়ে নিয়ে যায় প্রায়ই। তাড়াতে গেলে উল্টো তেড়ে আসে মানুষের দিকে। ওদের যন্ত্রণায় এখন বাড়িতে থাকাই দায়।
পাহাড়ে খাদ্যসঙ্কটে পড়ে এভাবেই বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ছে বানর। গভীর বন ছেড়ে লোকালয়ে এসে ধান, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল খেয়ে যাচ্ছে বানরের পাল। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন বিভাগ বলছে, শীতের শেষের দিকে পাহাড়ের গাছে পাতা ও ফলমূল কমে যাওয়ায় বানরের খাদ্যসঙ্কট তৈরি হয়। তাই বানর খাবারের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসে। এর আগে উপজেলার ওয়াহেদপুর ও জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে মানুষের বসতবাড়িতে গিয়ে সব ফলমূল নষ্ট করে ফেলে বানর।

পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, চার-পাঁচ মাস ধরে বানরের উৎপাত বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে হামলাকারী বানরের সংখ্যা। আগে বসতবাড়ি এলাকায় ঝাঁকে আট-দশটি বানর দেখা গেলেও এখন ঝাঁকগুলোতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০-১০০টি পর্যন্ত বানর দেখা যায়।
মিরসরাই সদর সংলগ্ন গোভানিয়া বিটের সামাজিক বনায়নকারী এই প্রতিবেদককে বলেন, আমার কয়েক একর বাগানের কলা, আমড়াসহ নানান ফল বানরের দল এসে এসে খেয়ে যাচ্ছে। তাতে দুঃখ নেই; বরং আমি বানরদের জন্য পাউরুটি, কলা, খিরাসহ নানা ফল বাজার থেকে কিনে এনে রেখে দিই। কিন্তু ওরা সেগুলো খাচ্ছে না, গাছ থেকেই খাবে। আবার হয়তো ভেজাল আছে কি না সন্দেহও করছে। তাই ওদের জন্য পর্যান্ত খাবারের গাছগাছালি প্রয়োজন।

উপজেলার সাইবেনিখিল ত্রিপুরাপাড়ার বাসিন্দা ও পাড়াপ্রধান ঊষা ত্রিপুরা বলেন, আগে গভীর বনে থাকলেও এখন প্রায়ই বাড়িতে চলে আসছে বানর। বাড়ির আশপাশে লাগানো গাছের কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল খেয়ে যাচ্ছে তারা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের করেরহাট রেঞ্জের কর্মকর্তা তারিকুর রহমান বলেন, শীতের শেষ দিকে পাহাড়গুলোতে পাতা ও ফলমূল কমে আসায় বানরের খাদ্যসঙ্কট তৈরি হয়। এতে অনেকসময় দল বেঁধে বানর বন ছেড়ে পাশের বসতবাড়ি ও ক্ষেতখামারে চলে আসে। গাছে নতুন পাতা গজালে এসব বানর আবার পাহাড়ের গভীর বনে ফিরে যাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চীনের রাষ্ট্রদূতের সাথে মঈন খানের বৈঠক আমাদের দু’টি বিজয় দিবস বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে : অ্যাডভোকেট জুবায়ের ভারতীয় চলচ্চিত্রে বাংলাদেশকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন! স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক, প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয়নি: বদরুদ্দীন উমর রাজশাহীতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ কর্মী গ্রেফতার জামায়াত নেতা ড. তাহের সম্পর্কে সাংবাদিক ইলিয়াসের মন্তব্যের প্রতিবাদ গাজীপুরে নতুন ট্রেন ও অসমাপ্ত বিআরটি লেনে বিআরটি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন বেনজীর ও মতিউরের বিরুদ্ধে দুদকের ৬ মামলা ছিনতাই রোধে রাজধানীতে শেষ রাতে পুলিশি টহল বাড়ানোর নির্দেশ পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সাথে বিএনপি নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সকল