১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন ক্ষেতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি

চিন্তিত কৃষকরা
-

সয়াল্যান্ড খ্যাত মেঘনা উপকূলীয় লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন চাষ হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ করা হয়েছে। বলা যায় অধিকাংশ ফসলি জমিই এখন সয়াবিনের দখলে। ক্ষেতে সবেমাত্র ফুল আসতে শুরু করেছে। কিন্তু সম্প্রতি সয়াবিন ক্ষেতে কিছুটা বিপর্যয় নেমে আসছে। চিন্তিত হয়ে পড়ছেন সয়াচাষিরা। কারণটা হলো, মাটি শুকিয়ে জমিতে লবণাক্ততা দেখা দিচ্ছে। ঝলসে যাচ্ছে সয়াবিনের চারা। এর থেকে উত্তরণে কৃষি বিভাগ থেকেও মাঠপর্যায়ে কোনো পরামর্শ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ চাষিদের। তারা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে জমিতে পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে লবণাক্ততা কমিয়ে আনা যেত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ সয়াবিনের ক্ষেতে চারা গজানোর হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। এ দিকে জমিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় কচি চারাগুলোও হলুদ হয়ে মরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, সবচেয়ে বেশি সয়াবিন উৎপাদন হয় কমলনগর ও রামগতিতে। এ মৌসুমে উন্নত জাতের (বিইউ, বিনা ও বারি) সয়াবিন আবাদ করা হয়েছে বেশি। এতে এবার প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

চরসীতা গ্রামের কৃষক আমির হোসেন বলেন, আমি প্রায় এক একর জমিতে সয়াবিনের চাষ করেছি। কিন্তু এবার আমার ক্ষেতের সয়াবিনের চারাগুলো ঝলসে গেছে। বৃষ্টি নেই, নোনা মাটির কারণে ২০ শতাংশ জমির সয়াবিনের চারা ঝলসে গিয়ে মাঠ খালি দেখাচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে কেউই চাষাবাদের বিষয়ে পরামর্শ দিতে আসছে না। এ ছাড়া কোনো বীজও দেয়া হয়নি কৃষি অফিস থেকে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন বলেন, যেসব জমির তলদেশে লবণাক্ত পানি থাকে, সেসব জমিতে তাপমাত্রা বেশি হলে পানি শুকিয়ে লবণের মাত্রা বেড়ে যায়। তবে জমি কিছুটা সিক্ত থাকলে লবণের মাত্রা কম থাকে। জমিতে কী পরিমাণ লবণাক্ততা রয়েছে সে বিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। মাঠপর্যায়ে গিয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, লবণাক্ততা থেকে ফসলকে বাঁচাতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা উচিত। ধান কাটার আগেই যদি বিনা চাষে জমিতে সয়াবিনের বীজ বপন করা হয়, তাহলে ফলন ভালো হয়। তখন জমি শুকানোর আগেই গাছ বড় হয়ে উঠে। এতে গাছের পাতার ছায়ায় মাটিতে রোদের তাপ কম পড়ে। ফলে লবণের তীব্রতা কম দেখা দেয়। এ ছাড়া বেশি পরিমাণে ভার্মি কম্পোস্ট বা জৈব সার ব্যবহার করলেও জমিতে লবণের মাত্রা কম হয়।


আরো সংবাদ



premium cement