০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`

রাজবাড়ীতে পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

রাজবাড়ীতে ৩৮ কোটি টাকার পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে : নয়া দিগন্ত -


রাজবাড়ীতে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজের। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া বেশ অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বাতাসে বাতাসে দোল খাচ্ছে কালো সোনার সাদা ফুল। আর এই সাদা ফুলের কদমেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন।
বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে রাজবাড়ী জেলার অবস্থান। দেশে উৎপাদিত মোট পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপাদন হয় রাজবাড়ীতে। এ জেলায় পেঁয়াজ আবাদের পাশাপাশি কদম পেঁয়াজ বীজের আবাদও হয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে। উৎপাদিত এসব বীজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়।

চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া ভালো হলে খরচ বাদে এই পেঁয়াজের বীজ চাষে লাভ হয় দ্বিগুণেরও বেশি। তাই এ বীজ আবাদ করে চাষিরা অন্যান্য ফসলে চেয়ে অধিক পরিমাণে লাভবান হয়ে থাকেন। প্রতি কেজি বীজ চলতি বছর আট হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, রাজবাড়ীর জেলা সদর উপজেলা, পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও গোয়ালন্দে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে জেলা সদর, পাংশা ও কালুখালীতে কদমের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। চলতি বছর রাজবাড়ী সদরে ৪২ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৪৪, কালুখালীতে ৪২, বালিয়াকান্দিতে ১৫ ও গোয়ালন্দে ৫ হেক্টরে পেঁয়াজের কদমের আবাদ হয়েছে।
পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার বোস বলেন, পেঁয়াজ বীজের গাছে শক্তি জোগাতে অনেকে কীটনাশক স্প্রে করছেন। মৌমাছি সঙ্কট থাকায় অনেক কৃষক হাত দিয়েই পেঁয়াজ ফুলের ‘মধু ফেলা’র কাজ করছেন।

সরেজমিনে বিভিন্ন উপজেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কালো সোনা খ্যাত সাদা ফুল। তবে প্রচণ্ড গরমে মৌমাছি কম থাকায় চাষিরা মৌবাক্স ভাড়া করে ক্ষেতে স্থাপন করায় গতবারের তুলনায় খরচ একটু বেশি হয়েছে। এবার প্রতি একরে খরচ হয়েছে এক লাখ টাকার মতো। ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে প্রতি একরে ৩০০ কেজির মতো ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৪৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।। আর ১৪৩ হেক্টর জমিতে বীজ উৎপাদন হতে পারে ৭০ মেট্রিক টন। আর এ পরিমাণ বীজের বাজার মূল্য ৩৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষি কর্মকর্তারা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এবার জেলায় দেড় হাজার কৃষক পেঁয়াজ বীজ আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ বীজের ফলনও ভালো হবে। এতে করে লাভবান হবেন চাষিরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement