১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গোয়ালন্দে জেলজরিমানায়ও থামছে না ফসলি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি

ভেকু মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি : নয়া দিগন্ত -

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন ও ফসলি জমিতে ভেক্যু দিয়ে মাটি উত্তোলন থামছে না। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানায়ও থেমে নেই ওই মাটি খেকোদের অবৈধ মাটি ব্যবসা। গ্রামীণ সড়কে বেপরোয়া গতিতে চলা মাটিবাহী ট্রাকচাপায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। দীর্ঘদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত না হওয়ায় মাটি খেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দেবগ্রামের অন্তার মোড় থেকে ফরিদপুর জেলা সংলগ্ন উজানচর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বদ্ধ কোল রয়েছে, যা মরা পদ্মা নামে পরিচিত। এক সময় প্রবহমান থাকলেও বর্তমানে এর বুকে বয়ে চলা জলধারার দুই পাশ জুড়ে জেগে ওঠা চরে রয়েছে হাজার হাজার একর ফসিল জমি ও বসতবাড়ি। দেবগ্রাম, দৌলতদিয়া, উজানচর ইউনিয়ন জুড়ে থাকা মরা পদ্মার বুকে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ৮ থেকে ১০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইটভাটা মালিকদের দাদনের টাকায় ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে ভেক্যু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। নদীতে সব সময় তাদের ড্রেজারের সাথে সংযোগ করা থাকে কয়েক মাইল জুড়ে লম্বা পাইপ। প্রতিটি খাল ভরাটে আয়তন অনুযায়ী ৫-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খাল মালিকের সাথে চুক্তি হয়ে থাকে।
আরো জানা যায়, মরা পদ্মার উজানচর ইউনিয়নের ফৈজদ্দিন পাড়ায় মনোয়ার হোসেন মনা, চর করনেশন ও কাচারী ডাঙ্গায় ইসমাইল হোসেন, দৌলতদিয়া সৈদাল পাড়ায় শহিদ মণ্ডল, আদু মাতুব্বর পাড়ায় শহিদ শেখ, দেবগ্রাম কাওলজানিতে নুরাল মেম্বর, কাটাখালী ও তেনাপচা এলাকায় মফিজ শেখ, তেনাপচা এলাকায় কাদের ফকির ও তার জামাতা আমজাদ হোসেনসহ অনেকেই ড্রেজারে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশ না করে একাধিক কৃষক জানান, আমাদের আবাদি জমি ড্রেজারের খালে ভেঙে পড়ে। বাড়িঘর হুমকির মুখে। বাধা দিলে মারপিট করে, জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। চেয়ারম্যান মেম্বরের কথায় মামলা তুলে নিতে হয়।
ছোট ভাকলা ইউনিয়নের চর বালিয়াকান্দী মাঠে তোতা মোল্লার তিন ফসলি জমি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা বাবু মিয়ার জমিতে ভেক্যু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে কয়েকটি ড্রাম ট্রাকে করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ সময় সুজিত বিশ্বাস ও জুয়েল প্রামানিক জানায় এ মাটি ভাটা মালিক আজিবর সরদার অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, আমি শুনেছি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ মাটি ব্যবসা চলছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুটি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে। ভেক্যু ও ড্রাম ট্রাকের চালককে জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। উপজেলার সব অবৈধ মাটি ব্যবসা বন্ধ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement