ঈদকে সামনে রেখে খটর খটর শব্দে মুখর পাখিমারার জামদানি পল্লী
- খাদেমুল বাবুল জামালপুর
- ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
রমজানের শেষ মুহূর্তে ঈদকে সামনে রেখে তাঁতের খটর খটর শব্দে মুখর হয়ে উঠছে জামালপুরের বকশিগঞ্জের জামদানি পল্লী। কয়েক শ’ বছর আগের মুঘলদের হাত ধরে এই অঞ্চলে শুরু হয় মসলিনের উত্তরাধিকারী জামদানি শাড়ি বুননের কাজ। তবে জামালপুরের বকশিগঞ্জের পাখিমারা গ্রামে ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয় জামদানি তৈরির কাজ।
বিগত ১৯ বছর ধরে পাখিমারা গ্রামের প্রতিটি ঘর যেন জামদানি তৈরির কারখানা। এখানে কাপড় বুননের কারিগর হিসেবে কাজ করছেন কিশোর থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠরাও। এই জামদানি কাপড় তৈরির কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে দুই শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ। এই অঞ্চলের তাঁতিদের হাতে রেশম সুতার নিপুণ বুননে তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি, পাঞ্জাবি ও টু পিস, থ্রি পিসসহ রেশমের রকমারি পণ্য।
ঈদকে সামনে রেখে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন জামদানি শাড়ি তৈরির কারিগররা। রকমারি নকশা ও নানা রঙ বেরঙে এবং ডিজাইনে একেকটি শাড়ির পেছনে দু’জন করে শ্রমিকের সময় যাচ্ছে কম পক্ষে সাত দিন। ৯ থেকে ২০ হাজার টাকা মূল্যের এই শাড়ি যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশ ও দেশের বাইরে। জামদানি কাপড় বুননের কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে পাখিমারা গ্রামের বাসিন্দারা। এবারের ঈদকে সামনে রেখে কোটি টাকার অধিক ব্যবসা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জামদানি কারিগর সুমন মিয়া বলেন, আমরা এখানে ৭-৮ বছর ধরে কাজ করি। জামদানি শাড়ি বানাই। সাদা, লাল, কালোসহ বিভিন্ন রঙের অসংখ্য জামদানি কাপড় তৈরি হয় এখানে। রমজানে কাজের প্রচুর চাপ থাকে। উপার্জনও হয় ভালো।
জামদানি কারিগর আক্কাস সোহান বলেন, আমি এখন যে শাড়িটা বানাচ্ছি, এটা বানাতে আমার এক সপ্তাহ সময় লেগে যাচ্ছে। আমার সাথে আরো একজন কাজ করছে। শাড়িটা ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। এর চেয়ে আরো বেশি দামের শাড়ি বুনি আমরা। তবে ৯ হাজার টাকার নিচে কোনো শাড়ি নেই। শাড়িগুলো চলে যায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে। সেখান থেকে চলে যায় দেশ ও দেশের বাইরে। জামদানি শাড়ি অনেক নিখুঁতভাবে বুনতে হয় বলে এর দামও বেশি। কিশোর কারিগর শাওন বলেন, শাড়ি বুননের কাজ করে আমার মাসে ১০-১২ হাজার টাকা উপার্জন হয়।
তবে তাঁত মালিকরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সব কিছুর দাম বাড়লেও জামদানি পণ্যের দাম বাড়েনি। এতে বাজার ধরে রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে। তারা বাংলার এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তা কামনা করছেন।
উদ্যোক্তা হাসান সবুজ বলেন, যেহেতু সুতার দাম বাড়তি, কাঁচামালের দামও বেশি- সে তুলনায় আমাদের শাড়ির দাম কমই বলা যায়। আমাদের জন্য কিছুট সহজ শর্তে ব্যবস্থা থাকা উচিত। তিনি বলেন, জামদানি পণ্যের ব্যবসাকে আরো সমৃদ্ধ করতে বিসিক আমাদেরকে প্রশিক্ষণ, বাজারজাতকরণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
জামালপুর বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর বলেন, উদ্যোক্তাদের যদি আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন হয় তা হলে আমরা বিসিকের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেবো। জামদানি তৈরিতে যে কাঁচামাল বা বিভিন্ন ধরনের যপ সুতা লাগে সেটা আমদানি করতে আমাদের সহযোগিতা নিতে পারেন উদ্যোক্তারা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা